২ মাসের মধ্যে ভাঙতে হবে ঢাকার ৪২টি ভবন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১২, ২০২৩, ০১:৫২ পিএম

২ মাসের মধ্যে ভাঙতে হবে ঢাকার ৪২টি ভবন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানিয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে ঢাকার অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪২ ভবন ভেঙে ফেলতে হবে। এর আগে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব ভবন খালি করতে নির্দেশনা দিয়ে ভবন মালিক বা কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

শনিবার (১১ মার্চ) নগর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নগর উন্নয়ন কমিটির বৈঠকে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রথমে এসব ভবনের মালিকদের নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে দুই মাস সময় বেঁধে দেওয়া হবে। তা না হলে, রাজউক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়ে মালিকপক্ষের কাছ থেকে খরচ আদায় করবে। 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৪২ ভবন এক সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে মালিকদের বলা হবে। তাদের নিজ উদ্যোগে দুই মাসের মধ্যে সেসব ভবন ভাঙতে হবে। এর বাইরে বাকি যে ভবনগুলো ব্যবহারের সুযোগ আছে, সেগুলোকে রেট্রোফিটিং করতে বলা হবে।

বৈঠকে আরও ১৮৭ ভবন মালিককেও নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজউক। তবে ঝুঁকির তালিকায় থাকা ওই ভবনগুলোকে রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার করা যাবে। তাই সংশ্লিষ্ট ভবন মালিক বা কর্তৃপক্ষকে ভবনগুলো রেট্রোফিটিং করে ব্যবহার করতে নোটিশ দেওয়া হবে। তারা নোটিশ মান্য না করলে সেগুলোও একই প্রক্রিয়ায় ভেঙে ফেলা হবে।

রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, আমরা এখনই সব ভবন নিয়ে শক্ত অবস্থানে যাব না। কারণ, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন আমরা এখনও চিহ্নিত করতে পারিনি। আপাতত নগরী নিরাপদ করার জন্য সচেতনতা বাড়ানোর কাজ শুরু করব। গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। দুর্ঘটনা রোধে যে কমিটিগুলো গঠন করা হবে, তাদের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে নোটিশ ইস্যু করা হবে। আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের (ইউআরপি) আওতায় চালানো জরিপে যে ভবনগুলো পাওয়া গেছে, আপাতত সেগুলোকেই নোটিশ দেওয়া হবে।

রাজউক বোর্ডের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস গণমাধ্যমকে বলেন, ইউআরপির তালিকায় থাকা অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা আপাতত প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ, এতে আবার মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হতে পারে।

রাজউক জানায়, রাজধানীতে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনাগুলো নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে যাতে ভবন ব্যবহার ও নকশার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

নকশার ব্যত্যয় থাকলে সেটি যেন নিজ উদ্যোগে ভবন মালিকরা ঠিক করে নেন সেদিকেও নজর রাখবে রাজউক। চলমান বেজমেন্টের অবস্থা-সংক্রান্ত জরিপের কাজ শেষ হলে ওই সব ভবন মালিককেও বেজমেন্টের ব্যবহারবিধিসংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া হবে। না মানা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মালিকদের দণ্ড দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করবে রাজউক।

এ বৈঠকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীতে উন্মুক্ত স্থান বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নিনির্বাপণে পানি পাওয়া যায় না। সেজন্য প্রয়োজনে ভরাট হওয়া জলাশয় রাজউক অধিগ্রহণ করে জলাধারগুলো রক্ষা করবে। এজন্য ল্যান্ড সার্ভে করে একটি প্রকল্প নিবে বলে জানিয়েছে রাজউক।

বৈঠকে রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তারা ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামিম আখতার, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!