করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে শনিবার সারা দেশে এক কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার সকাল ৯টায় টিকার কার্যক্রম শুরু হয়। কেন্দ্রে যতক্ষণ লোক থাকবে ততক্ষণ টিকাদান কার্যক্রম চলবে বলে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।আগামীকাল থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে প্রথম ডোজ দেওয়ার কাজ। চলবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ (বুস্টার) টিকা কর্মসূচি।
সার্বিক প্রস্তুতির ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গণমাধ্যমকে বলেন, “শনিবার যাতে ৭০ শতাংশ মানুষের টিকা শেষ হয়, আমরা সে পরিকল্পনা করেছি। প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখিনি। কেন্দ্রে যতক্ষণ লোক থাকবে, টিকাদানও ততক্ষণ চলবে।”
টিকা পেতে কোনো ধরনের নিবন্ধন কিংবা কাগজপত্র লাগছে না বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির (ইপিআই) পরিচালক ও জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পরিকল্পনার সদস্য শামসুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার ১০টার দিকে মিরপুরের শেওড়াপাড়া বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া, কারওয়ান বাজার, যা্ত্রাবাড়ী, গোপীবাগ, মিরপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, ফার্মগেট, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টিকা কেন্দ্রে ব্যাপক আগ্রহ সহকারে টিকা নিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশা এবং বয়সের মানুষ।
টিকা নিতে আসা এসব লোকজন বলছেন, টিকা কেন্দ্রে আরো বুথ বাড়ানো দরকার। টিকাদান কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গণটিকার জন্য গ্রামাঞ্চলে ১৬ হাজারের বেশি ও শহরাঞ্চলে (পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন) সাড়ে আট হাজার অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে প্রয়োজন অনুযায়ী সব ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত বুথ ও ভ্যাক্সিনেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৭০ হাজারের মতো ভ্যাক্সিনেটর ও স্বেচ্ছাসেবক টিকা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
গণটিকা কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর এবং কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক গণমাধ্যমে বলেন, “লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য আমরা গত কয়েক দিন ধরেই টিকায় গতি এনেছি। আগে যেখানে দিতাম তিন লাখ, সেখানে বৃহস্পতিবার ১৯ লাখের মতো টিকা দিয়েছি। ফলে শনিবারের গণটিকায় আশা করছি বাকি এক কোটি টিকা দিতে পারব।”
টিকাদান কার্যক্রমে ঢাবার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৩০টি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৪০, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে প্রতিটি জোনে ৬০টি করে এবং খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের প্রতিটি জোনে অতিরিক্ত ২৫টি করে ভ্রাম্যমাণ দল রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।