নেতিবাচক নীতিমালায় রিকন্ডিশন্ড মোটরযান বিপর্যয়ে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২, ২০২১, ০৪:১৪ পিএম

নেতিবাচক নীতিমালায়  রিকন্ডিশন্ড মোটরযান বিপর্যয়ে

দশ বছর ধরে কিছু নেতিবাচক নীতিমালার কারণে রিকন্ডিশন্ড মোটরযান খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে । ফলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার (২ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) এমন দাবি উপস্থাপন করে শুল্কছাড়ের বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।

সংগঠনটি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ব্র্যান্ডনিউ গাড়ির সঙ্গে রিকন্ডিশন্ড বা পুরাতন গাড়ির আমদানিতে স্পেসিফিক ডিউটি বা সুনির্দিষ্ট শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের আয়কর নীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বারভিডার পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাব এসেছে, তা রাজস্ব সহায়ক। নিতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রস্তাবগুলো তুলেধরা হবে। আশা করছি নতুন বাজেট এ খাতের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।’

আব্দুল হক বলেন, গত ১০ বছর ধরে কিছু নেতিবাচক নীতিমালার কারণে রিকন্ডিশন্ড মোটরযান খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এর ফলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পুরনো গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় এবং নতুন গাড়ির শুল্ককর কম হওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পুরনো গাড়ির দাম তুলনামূলকভাবে বেশী হওয়ায় ক্রেতাগণ নিম্নমানের নতুন গাড়ি কিনে ক্ষতিগ্রস্ত বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।

জাতীয় বাজেটে বিবেচনার জন্য বারভিডা- অবচয় হার পুনঃনির্ধারণ; সিসি স্ল্যাব ও সম্পুরক শুল্কের হার পুনঃবিন্যাস; ফসিল ফুয়েল গাড়ি (সম্পুরক শুল্ক); রিকন্ডিশন গাড়ির সংজ্ঞা নির্ধারণ; অবচয় প্রদানের উদ্দেশ্যে গাড়ির বয়স গননা পদ্ধতি সংশোধন; বেশি সংখ্যক যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার; পাবলিক ট্রান্সপোর্টের আমদানি শুল্ক কমানো; পিকআপ, ডাম্প ট্রাক, ফায়ার ফাইটিং ভেহিক্যালসসহ অন্যান্য বিশেষায়িত মোটরযানের আমাদানি শুল্ক কমানো এবং আমদানি রিকন্ডিশন মোটরযান বিক্রি ও বিপণনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভ্যাট দেওয়া নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রস্তাব করে।স্পেসিফিক ডিউটি বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হক বলেন, অনেক দেশে নির্দিষ্ট শুল্ক আরোপের নজির রয়েছে। সিসি ও মোটরযনের প্রকৃতিভেদে স্পেসিফিক ডিউটি আরোপ করা যেতে পারে। সমপ্রকৃতির ব্র্যান্ডনিউ মোটরযানের ওপর আরোপিত স্পেসিফিক ডিউটি থেকে বছরভেদে ও গাড়ির প্রকৃতিভেদে ১ বছর পুরনো ১০ শতাংশ, ২ বছর পুরনো ২০ শতাংশ, ৩ বছর পুরনো ৩০ শতাংশ, ৪ বছর পুরনো ৪০ শতাংশ এবং ৫ বছর পুরনো ৫০ শতাংশ হারে অবচয় প্রদানপূর্বক রিকন্ডিশন গাড়ির শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব করেছি।

তিন বলেন, ব্র্যান্ডনিউ গাড়ির মূল্য নির্ধারিত হয় আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্যের ভিত্তিতে। এ প্রক্রিয়ায় আন্ডার ইনভয়েসিং এবং বিভিন্ন ফাঁকফোকর তৈরি করে শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। বৈষম্যের কারণে নতুন গাড়ির চেয়ে পুরনো গাড়ির মোট কর আপতন বেশি দাঁড়াচ্ছে। রিকন্ডিশন গাড়ির শুল্ক বেশি হওয়ায় এ গাড়ির বিক্রি লক্ষ্যনীয়ভাবে কমে গিয়ে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে।

এনবিআরের পক্ষ থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন বিভাগের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, শুল্ক নীতি ও আইসিটি বিভাগের সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরীয়াসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বারভিডার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম (সম্রাট), জসিম উদ্দিন মিন্টু এবং যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। 

Link copied!