মে ২৭, ২০২৩, ০৬:২৯ পিএম
বঙ্গবাজারে গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য এক কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার (২৭ মে) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ অন্য নেতারা বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের হাতে এক কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবসা করতে হলে নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা করা উচিত। তাহলে দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এরপরও কোনোভাবে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করি এমন পরিস্থিতিতে সবার পাশে দাঁড়াতে।’
বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য যেন স্থায়ীভাবে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হয়, এফবিসিসিআই সভাপতি সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। স্থায়ী সেই ব্যবস্থায় যেন প্রকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।
মো. জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা যেমন সতর্ক থাকবেন, তেমনই সরকারের যেসব সংস্থা নানা রকম অনুমোদন দেয়, তাদেরও নিয়মিত তদারক করা দরকার। কোনো ব্যবসায়ী কিন্তু চান না তাঁর প্রতিষ্ঠান পুড়ে যাক। সুতরাং সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে বাজার, মার্কেট ও ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই না এমন আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটুক, ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হোক। এ জন্য মার্কেটগুলোর নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক তদারকির বিকল্প নেই। তাতেও হয়তো শতভাগ নিরাপদ করা সম্ভব নয়। কারণ, অনেক বিপণিবিতান পরিকল্পনা ছাড়া তৈরি হয়েছে। কিন্তু চেষ্টা করতে হবে কোনোভাবেই যেন আর জান-মালের ক্ষতি না হয়।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা দিতে আইএফআইসি ব্যাংকে একটি হিসাব খোলা হয়। সেই ব্যাংক হিসাবে এফবিসিসিআইয়ের ১ কোটি টাকাসহ এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার টাকা জমা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সহায়তা তহবিলের এই অর্থ একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটে (বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, মহানগরী ও আদর্শ) মিলে মোট দোকান ছিল ২ হাজার ৯৬১টি। এখন এই দোকানগুলোর চিহ্ন নেই। এ ছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে ৫৯টি ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সে ৩৪টি দোকান আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গবাজারে সব মিলিয়ে ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মালপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকার বেশি। আর মার্কেটগুলোর কাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ ছাড়া দোকানের মালিক-কর্মচারীদের মানবিক, মানসিক বিপর্যয়সহ ক্ষতির পরিমাণ, চাকরিহীনতার আর্থিক মাপকাঠি নিরূপণ করা দুরূহ বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।