৪৬০০ কেজি পণ্য নিয়ে ঢাকা ছাড়লো দেশের প্রথম লাগেজ ভ্যান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম

৪৬০০ কেজি পণ্য নিয়ে ঢাকা ছাড়লো দেশের প্রথম লাগেজ ভ্যান

সংগৃহীত ছবি

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও অন্যান্য মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হয়েছে লাগেজ ভ্যান। প্রথম লাগেজ ভ্যান নিয়ে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা ছেড়েছে ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটের জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (৭১৮)। ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের নন-রেফ্রিজারেটর লাগেজ ভ্যানে ৪ হাজার ৬০০ কেজি মালামাল বুকিং নেওয়া হয়।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।

এর আগে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ফিতা কেটে লাগেজ ভ্যান উদ্বোধন করেন এবং সবুজ পতাকা নেড়ে ট্রেন ছাড়ার অনুমতি দেন।

যাত্রীবাহী ট্রেনে এ মালামাল পরিবহন বাবদ রেলওয়ে আয় করেছে ১০ হাজার ২১২ টাকা। এই পথে কেজিপ্রতি পরিবহন খরচ ২ টাকা ২২ পয়সা ধরা হয়েছে।

উদ্বোধনের আগে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের চাহিদার ভিত্তিতে সবুজ শাক-সবজি, মৌসুমি ফল, ফুল, অন্যান্য পচনশীল দ্রব্য (মাছ, মাংস, দুধ), ঔষধ ও ভ্যাকসিন রেলযোগে পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে লাগেজ ভ্যান ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার লক্ষ্যে ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১২৫টি লাগেজ ভ্যান (৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ) সহ আরও অন্যান্য রোলিং স্টক (৪০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, ৫৮০টি মিটারগেজ ওয়াগন ও ৪২০টি ব্রডগেজ ওয়াগন) সংগ্রহের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০১৮ সালের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদিত হয়।

পরে ওই বছর জুলাই মাসে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের জন্য দুটি দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চীনের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট পৃথক দুটি চুক্তি হয়। মোট চুক্তি মূল্য ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা (৭৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তি মূল্য ১৮৩ কোটি ২৪ লাখ এবং ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের চুক্তি মূল্য ১৭৫ কোটি ১৫ লাখ)।

মন্ত্রী বলেন, রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে (যেখানে প্রচুর শাক-সবজি, মৌসুমি ফল, ফুল এবং অন্যান্য পচনশীল দ্রব্য যেমন– মাছ, মাংস, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি উৎপাদিত হয়) নির্ধারিত আন্তঃনগর ট্রেনের মাধ্যমে লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হবে। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত দ্রব্য সহজে বাজারজাত করতে পারবেন এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা দেশের শহরগুলোতে কৃষিজাত পণ্যগুলো সহজে সরবরাহ করতে পারবেন। ফলে দ্রব্য সহজলভ্য হবে এবং ন্যায্যমূল্যে পাওয়া যাবে। এ ট্রেন চালু হলে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, যা সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এই কৃষি পণ্য পরিবহনের বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি। আমরা আড়তদার ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেহেতু আমরা এটা মাত্র শুরু করলাম, তাই ভবিষ্যতে এটাকে বহুমুখী করার জন্য অন্যান্য পরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। আমরা এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা রেল নিয়ে কোনো ব্যবসা করতে চাই না। আমরা সুযোগ দিতে চাই। আমরা আপাতত ১৬টি ট্রেনে একটি করে লাগেজ ভ্যান দিচ্ছি। চাহিদার ওপর নির্ভর করে আমরা লাগেজ ভ্যান বাড়াব।

Link copied!