সবদিকে যখন ডেঙ্গুর ছড়াছড়ি তখন ক্রমেই বেড়ে চলেছে ফলের দাম। যেখানে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ফল-টাই প্রয়োজন।
দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দামই এখন বাড়তি। ধরনভেদে এক মাসের ব্যবধানে বিদেশি ফলের কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ টাকার বেশি ।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীরা যেসব ফল বেশি খান, সেগুলোর দামও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গত এক মাসে মাল্টার দাম কেজিতে ১০০ টাকার বেশি বেড়েছে। এ ছাড়া কমলা, আপেল, আঙুর, আনার, পেঁপেসহ অন্যান্য বিদেশি ফলের দামও বাড়তি।
ডেঙ্গুর কারণে সবচেয়ে বেশি চাহিদা তৈরি হয়েছে ডাবের। এটি আমদানি হয় না। আবার এটির সাথে উৎপাদন খরচেরও কোনো বিষয় নেই। শুধু ডেঙ্গুর কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডাবের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ভালো মানের একটি ডাব রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। ১০০ টাকার কমে যেসব ডাব বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো আকারে ছোট। মানও ভালো নয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় হাসপাতাল বেশি, সেখানে ডাবের দামও বেশি। রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় অভিজাত সব হাসপাতালের অবস্থান সরেজমিনে এই এলাকায় ভ্যানে বিক্রি করা ডাবের দাম যাচাই করে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ। কোথাও ১৫০ টাকা মূল্যের নিচে ডাব নেই।
আমদানি করা ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মাল্টার। বাজারে আমদানি করা প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩২০ থেকে ৩৭০ টাকায়। কোথাও কোথাও আরও একটু বেশি। এক মাস আগেও ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মাল্টার দাম ছিল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। সেই হিসাবে, এক মাসে মাল্টার দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডেঙ্গুর কারণে এক মাস ধরে বাজারে মাল্টার চাহিদা বেড়েছে। তাতে দামও বেড়েছে লাফিয়ে।
আমদানিকারকেরা বলছেন, ডলার-সংকটের কারণে এমনিতেই ফলের আমদানি কমেছে। এর মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে মাল্টা, কমলা, আঙুরসহ বিভিন্ন ফলের চাহিদা। তাতেই হঠাৎ করে দামও বেড়ে গেছে। গত বছর ফল আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ব্যাংকগুলো ফল আমদানির ঋণপত্র খোলা সীমিত করে দেয়। আবার যেটুকু আমদানি হচ্ছে, ডলারের বাড়তি দামের কারণে সেগুলোর আমদানি খরচও বেশি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশি ফলের আমদানি আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ কমে গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪ টন ফল। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৮ লাখ ৯ হাজার ৭৯৬ টন। সেই হিসাবে, এক বছরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫২ টন ফল আমদানি কম হয়েছে।
আমদানি করা ফলের মধ্যে শতাংশের হিসাবে সবচেয়ে বেশি কমেছে আপেল ও আঙুর। সর্বশেষ গত অর্থবছরে এই দুই ধরনের ফল আমদানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৯ শতাংশ করে কমে গেছে।
সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বিদেশি ফলের চাহিদা বেশি থাকে। কারণ, এ সময় দেশীয় ফলের সরবরাহ কম থাকে।