টানা পঞ্চম দিনে এনবিআরের কলম বিরতি, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যজট

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৯, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

টানা পঞ্চম দিনে এনবিআরের কলম বিরতি, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যজট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে পঞ্চম দিনের মত কলম বিরতিতে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শুধু অর্থ উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করতে রাজি নন তারা।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের এই কলম বিরতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজস্ব কার্যক্রম। কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনে ব্যাহত শুল্কায়ন কার্যক্রম। এর প্রভাব পড়েছে পণ্য খালাসেও। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস নিতে না পারায় গুণতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ।

আমদানিকারকরা বলছেন, জরুরি খাদ্যপণ্য সময়মতো খালাস না হওয়ায় বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ছে। এছাড়া রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমারও শঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে শুল্ক কর্মকর্তাদের কলম বিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে তৈরি হচ্ছে পণ্যজট। প্রতিদিন বেলা তিনটা পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। পাশাপাশি শুল্কায়নে দীর্ঘসূত্রিতায় পণ্যের ওপর মাসুলও বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাবে শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯২ ভাগ হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এর প্রায় পুরোটা শুল্কায়ন হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। কিন্তু এনবিআর ভেঙে আলাদা দুটি বিভাগ চালুর প্রতিবাদে কলম বিরতিতে কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা।

গত বুধবার থেকে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কর্মসূচির কারণে ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব কার্যক্রম। দিনের শেষ ভাগে কাজ শুরু করায় বাড়ছে ভোগান্তিতে পড়ছে সেবাগ্রহীতারা। 

একজন আমদানি-রপ্তানিকারক বলেন, ‘কেউ কোনো কাজ করতে পারছে না। ওখানে গিয়ে দেখা যায় তারা আস্তে ধীরে কাজ করছে। হিসাবে আসলে সারাদিনই এটা বন্ধ আছে। পোর্টে যে ডেমারেজ আসছে এক্সপোর্ট ও ইমপোর্টের, এই টাকা সিএনএফও দেবে না কাষ্টমসও দেবে না। এটা দেবে এক্সপোর্টার এবং ইমপোর্টার।’

গত ১০ মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ দিয়েই রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা। তবে কলম বিরতির প্রভাবে প্রতিদিন রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাবে রাজস্ব ঘাটতি বাড়তে পারে বলে শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। 

চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি জামাল উদ্দিন বাবলু বলেন, ‘বন্দরের ডেমারেজ চার্জ এখন ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেকটা পণ্যের ওপর এই ডেমারেজ চার্জ কনভার্ট করে, যে আমদানি করে সে পণ্যের দাম নির্ধারণ করে। অতএব পণ্যের মূল্য বাড়বে। আমদানি খরচও বাড়বে।’ 

৪ থেকে ৫ ঘণ্টা কর্মবিরতির পর বিকেল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত চলছে শুল্কায়ন কার্যক্রম। এতে পণ্য খালাস কম হওয়ায় বন্দরে তৈরি হচ্ছে পণ্যজট। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘যেটা হচ্ছে কি, ৩ টা পর্যন্ত কর্মবিরতির কারণে বিকেলের দিকে আমাদের প্রেশার হচ্ছে খুব বেশি। অনেকটা জটলা হয়ে যাচ্ছে। সারাদিনের যেটা কাজ সেটা যদি দিনব্যাপী হয় তাহলে এর প্রেশারটা ডিস্ট্রিবিউট হয়ে যেতো।’

গত অর্থ বছরে এই শুল্ক স্টেশন থেকে রাজস্ব আদায় হয় ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

Link copied!