হঠাৎ করেই আগস্টের শুরুতে বেড়ে যায় ডিমের দাম। নাগালের বাইরে যেতে থাকে সাধারণ জনগণের সাধারণ এই খাদ্যপণ্যটি। এরপর বেড়ে যায় পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, ডালসহ আরও কিছু পণ্যের দাম। যার প্রভাবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গেল মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে। অন্যদিকে শহরের চেয়ে গ্রামে এই হার বেশি। গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ।
রবিবার আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
এতে দেখা যায়, সার্বিকভাবে সারাদেশে আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের চেয়ে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। জুলাই মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জুনে যা ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি সামান্য কম। আগস্টে শহরাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ, যা আগের মাসে অর্থাৎ জুলাই মাসে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। মাস শেষে যা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জুনে যা ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অবশ্য খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেশ কমেছে। জুলাই মাসের ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশের মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে নেমেছে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশীয় পয়েন্ট। গ্রাম ও শহরাঞ্চল– উভয় ক্ষেত্রেই এ প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। গত মাসে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জুলাই মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি গ্রামের চেয়ে শহরে কিছুটা বেশি।
ভোক্তা মূল্যসূচকে থাকা খাদ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, চিনিসহ ১২৭টি পণ্য। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতের মধ্যে রয়েছে কেরোসিনসহ সব ধরনের জ্বালানি তেল, স্বর্ণ, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যয়সহ ২৫৬টি পণ্য ও সেবার খরচ। মোট ৭৪৯ ধরনের পণ্য ও সেবার বাজারদর সংগ্রহ করে থাকে বিবিএস। সব সিটি করপোরেশন এবং ৫৬ জেলা শহরের বাজার থেকে শহরের দর এবং ৬৪ জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ বাজার থেকে গ্রামীণ পণ্য ও সেবার দর সংগ্রহ করা হয়। কোনো মাসে ভোক্তা মূল্য সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটুকু বাড়ল, তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি।
গত এপ্রিল থেকে মূল্যস্ফীতির হিসাব পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়।
আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তিবছর ধরে এ হিসাব করা হতো। এখন ভিত্তিবছর পরিবর্তন করে ২০১৫-১৬ অর্থবছর করা হয়েছ। নতুন পদ্ধতিতে পণ্য ও সেবার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।