শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে ঋণ চায় গার্মেন্টস মালিকরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ২৭, ২০২১, ০৩:৫৫ পিএম

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধে ঋণ চায় গার্মেন্টস মালিকরা

আসন্ন ঈদে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধে আগের মতো একই শর্তে ঋণ চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি দিয়েছে পোশাক মালিকরা। বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ও বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান ওই চিঠিতে সই করেছেন। গত ২৪ এপ্রিল পাঠানো ওই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছেও।

চিঠিতে বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছর সচল রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে সহজ শর্তে ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়ার জন্য আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) এবং প্রধানমন্ত্রীকে পোশাক শিল্পখাতের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল-মে-জুন-জুলাই, ২০২০ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার ফলে এ শিল্পের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে এবং সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছে।

চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে পোশাক শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং এর প্রভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য অনেক ক্রেতা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করার ফলে তাদের কাছ থেকে রফতানি করা পণ্যের বিপরীতে পেমেন্ট পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ক্রেতা কর্তৃক ক্রয়াদেশ বাতিল/স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার ফলে পোশাক খাত নিদারুণ আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।

বিশ্ব বাজারে রফতানি সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অন্যান্য দেশের তুলনায় হ্রাসকৃত মূল্যে পোশাক রফতানি করে থাকে যার মধ্যে মুনাফার অংশ খুবই কম থাকে, টিকে থাকার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে লস দিয়েও ক্রয়াদেশ নিতে বাধ্য হয়। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ব্যয় পরিশোধ করা হতো ক্রেতার কাছ থেকে পেমেন্ট পাওয়া এবং নগদ সহয়তা বাবদ প্রণোদনার অর্থ প্রাপ্তির পর। কিন্তু রফতানিমূল্য প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণে নগদ সহায়তার আবেদনও করতে পারছে না। আবার অনেক ক্রেতা ডিসকাউন্ট হারে মূল্য পরিশোধ করছে। যার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট নিরসন করতে পারছে না।

চিঠিতে মালিকরা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পুনরায় শুরু হয়েছে করনোর দ্বিতীয় ঢেউ। বিশ্বের অনেক দেশই লকডাউন ঘোষণা করেছে। যার ফলশ্রুতিতে যেসব ক্রেতা পেমেন্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারাও পেমেন্ট দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছে। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদে সচল কারখানাগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস দিতে রফতানিকারকদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।’

উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকটের কারণে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের জন্য অর্থের যোগান দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী পোশাক শিল্পকে সহায়তা করতে শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে ও জুন, ২০২১ মাসের বেতন-ভাতা ও বোনাস দেওয়ার জন্য আগের মতো সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া একান্ত আবশ্যক বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, শিল্প-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে ইতোমধ্যেই বিশ্বের উন্নত-অনুন্নত সব দেশ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে একাধিকবার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছে। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদে শ্রম-অসন্তোষ রোধে এবং আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে অর্থের যোগান দেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বস্ত্রখাতের ৩টি সংগঠনের পক্ষ থেকে আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

Link copied!