ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪, ০৩:৩৩ পিএম
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিট। ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। আর মাত্র ১০ মিনিট পরেই শুরু হবে পরীক্ষা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষনা ইনিস্টিটিউটের সামনে কাঁদতে দেখা যায় একটি ভর্তিচ্ছুকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুল কক্ষকেন্দ্রে চলে এসেছেন তিনি। তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।
ততক্ষণে পরীক্ষার্থী বাদে অন্যদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে আইইয়ার ভবন থেকে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষে কক্ষে যার যার সিটে বসে গেছে পরীক্ষার্থীরা। এসময় কাঁদতে থাকা মেয়েটিকে দেখে এগিয়ে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। তাদের সবার সঙ্গে ছিল মোটরসাইকেল। পরীক্ষার স্থান নিশ্চিত হয়ে দ্রুত মেয়েটিকে বাইকে করে পৌঁছে দিয়ে আসে ওই ছাত্রলীগকর্মীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক আরিফ ইশতিয়াক রাহুল বলেন, ‘একটা মেয়ে ঠিকানা ভুল করে আইইইয়ার ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। পরে তার সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষার স্থান নিশ্চিত হয়ে বাইকে করে দিয়ে আশা হয় তাকে। যেতে যেতেও মেয়েটার চোখে ছিল স্বপ্ন ভঙ্গের ছাপ, অঝোরে কাঁদছে। অবশ্য নাম না জানা সেই শিক্ষার্থীকে ঠিক সময়েই তার গন্তব্যে দিয়ে আসা হয়েছে। আশা করি সে ভালোই এক্সাম দিবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ফারদিন বিন ফরিদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে আমরা পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সুপেয় পানি, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং বাইক সার্ভিস দিচ্ছি। ছাত্রলীগের সেচ্ছাসেবকরা ক্যাম্পাসে সকল ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
এভাবেই আজ পরীক্ষার সময় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাইক সার্ভিস দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। তাদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। ঢাবি ছাত্রলীগের নির্দেশেই প্রথমবারের মত ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ চালু করা হয়েছিল এবার। নীলক্ষেতে, শাহবাগে, দোয়েল চত্বরে, চানখারপুলে, ডিএমসির মোড়ে প্রায় শ`খানেক বাইক প্রস্তুত ছিল পরীক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে।
ঢাবি ছাত্রলীগের সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্তৃক ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের জন্য বিশ্রামাগার, জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা, মোবাইল টয়লেট, জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের মাধ্যমে সহায়তা দিয়ে আসছে। জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজের পকেটের টাকা দিয়ে তেল খরচ দিয়ে ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে আসছে। প্রায়ই দেখা যায় অনেক পরীক্ষার্থী ঢাবিতে এসে পরীক্ষার হল খুঁজে পায় না। তাদের বিভিন্ন হলে দিয়ে আসছে। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও বিভিন্ন কেন্দ্রেও দিয়ে আসছে।’
শুধু বাইক সার্ভিস নয়, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় তথ্য কেন্দ্র, সুপেয় পানি, মোবাইল টয়লেট মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা করে ঢাবি ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসের বিভিন্নস্থানে তারা বুথ করে তথ্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করে। আজ সকাল থেকেই সেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সহায়তা করেন।