মে ১২, ২০২৪, ০৯:১৮ এএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গতকাল শনিবার রাতভর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে একপক্ষকে তথ্য দেওয়ায় এক নিরাপত্তাকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এদিকে ওই নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে শিবির ও ছাত্রদলের কাছেও তথ্য পাচারের পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে।
‘আতিক কখন হলে আসে, কখন যায়, কখন, কী করে এসব তথ্য আমি নিয়াজকে পাঠাই এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আতিকের নেতাকর্মীরা আমাকে মারধর করে। কিন্তু আমি এ ধরনের কাজ করিনি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাড়িতে আছি। আমি হল প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি’
- মনিরুল ইসলাম
নিরাপত্তাকর্মী
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের সঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: গেস্টরুমে বসা নিয়ে মধ্যরাতে রাবি ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
এর জেরে রোববার (১২ মে) সকাল ছয়টার দিকে নিয়াজ মোর্শেদকে তথ্য দেওয়ার অভিযোগে দায়িত্বরত এক নিরাপত্তাপ্রহরীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারীরা। এ ঘটনায় আহত ওই নিরাপত্তাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
আহত নিরাপত্তাকর্মীর নাম মনিরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: রাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগের পাহাড়
ঘটনায় জড়িত নেতাকর্মীরা হলেন- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান, মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগ কর্মী সানি হাজারী, মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশ। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
হল সূত্র জানায়, আজ সকাল ছয়টা ২০ মিনিটে হলে ঢোকেন হল শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক। নিরাপত্তাকর্মী মনিরুল ইসলামকে ডেকে এনে হল গেটের ভেতর বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে যোগ দেন অভিযুক্ত আরও কয়েকজন নেতাকর্মী। একপর্যায়ে আকাশ তাকে চড়-থাপ্পর মারতে শুরু করেন। সিসিটিভি ফুটেজে তাদের মারধরের ঘটনা সচিত্র দেখা যায়।
ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আতিক কখন হলে আসে, কখন যায়, কখন, কী করে এসব তথ্য আমি নিয়াজকে পাঠাই এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আতিকের নেতাকর্মীরা আমাকে মারধর করে। কিন্তু আমি এ ধরনের কাজ করিনি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাড়িতে আছি। আমি হল প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আতিকুর রহমান বলেন, ‘ওই নিরাপত্তাকর্মী আমাদের তথ্য শিবির-ছাত্রদলের কাছে পাচার করে দিতো। আমার ছোটভাইরা তাকে হাতেনাতে আটক করে হল প্রাধ্যক্ষের হাতে তুলে দিয়েছি।’
তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেলেও অন্য দুই অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযুক্ত আকাশ বলেন, “আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম। আমি কিছুই জানি না।”
একই কথা বলেছেন অপর অভিযুক্ত সানিও।
বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ধরেননি তিনি।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আতিকের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাদের এক নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করেছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।”
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।