নানা সমস্যায় জর্জরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। আসন সংকট এবং তা বিসিএস প্রার্থীদের দখলে থাকা অন্যতম। সম্প্রতি ভিসির বক্তব্যে বিষয়টি উঠে এসেছে ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আমি এই সিদ্ধান্তের ভুক্তভোগী হলেও একে স্বাগত জানাই। এর ফলে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন হয়তো আসবে না। তবে বিষয়টা পরিবর্তন হবে। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পরিবেশ পাবে
- জর্জিস, শিক্ষার্থী
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)
এক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছিলেন, “এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়ার জন্য যায়। আমরা লাইব্রেরিতে কার্ড পাঞ্চ পদ্ধতি চালু করবো। যেসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্বের মেয়াদ শেষ তারা কেবল বিসিএস পড়তে যায় লাইব্রেরিতে। এর ফলে তাদের প্রবেশ অসম্ভব হয়ে যাবে, সেখানে কার্ড পাঞ্চ করে যেতে হবে।”
এই বক্তব্যের পরে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কেউ স্বাগত জানান কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেন। এই সিদ্ধান্তকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জার্জিস বলেন, “বিষয়টা ইতিবাচকভাবে দেখলেও খুব একটা আশাবাদী না। কারণ, এরকম উদ্যোগ আগেও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমি লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যু করিয়েছি কিন্তু দেখা গেছে বইয়ের মলাট ছিঁড়ে গেছে। কিন্তু আমিই প্রথম বইটা ইস্যু করিছি। লাইব্রেরির একটা সামগ্রিক পরিবর্তন দরকার।”
এদিকে ভিসির বক্তব্যকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন উল্লেখ করে দর্শন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, “বিষয়টা ইতিবাচক ও সময়োপযোগী। এতে লাইব্রেরিতে বসে বিসিএসে পড়া পড়ার প্রবণতা সামান্য হলেও কমবে।”
এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়ার জন্য যায়। আমরা লাইব্রেরিতে কার্ড পাঞ্চ পদ্ধতি চালু করবো। যেসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্বের মেয়াদ শেষ তারা কেবল বিসিএস পড়তে যায় লাইব্রেরিতে। এর ফলে তাদের প্রবেশ অসম্ভব হয়ে যাবে, সেখানে কার্ড পাঞ্চ করে যেতে হবে
- অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল
উপাচার্য (ভিসি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিউটের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, “আমি এই সিদ্ধান্তের ভুক্তভোগী হলেও একে স্বাগত জানাই। এর ফলে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন হয়তো আসবে না। তবে বিষয়টা পরিবর্তন হবে। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পরিবেশ পাবে। নিয়মিত লাইব্রেরিতে আসতে উৎসাহিত হবে। কাউকে ভোরে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ধাক্কাধাক্কি করতে হবে না। সর্বোপরি একটা শৃঙ্খলা থাকবে। আরেকটা ব্যাপার হলো বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”
সিদ্ধান্তটি কবে এবং কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বিষয়টি নিয়ে গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসিরুদ্দীন মুন্সী বলেন, “এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। নির্দেশনা পেলে আমরা কাজ শুরু করবো।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুনের শেষে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে পারে।