এসএসসিতে থাকছে না পৃথক বিভাগ: শিক্ষামন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ০৪:০৫ পিএম

এসএসসিতে থাকছে না পৃথক বিভাগ: শিক্ষামন্ত্রী

আগামী ২০২৩ সাল  থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার আগে আার কোনো পাবলিক পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পাশপাশি দশম শ্রেনি পর্যন্ত বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ থাকছে না বলেও তিনি জানান।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার আগের কোনও পাবলিক পরীক্ষা থাকছে না। পঞ্চম শ্রেণি সাময়িকী পিইসি, অষ্টম শ্রেণি সাময়িকী জেএসসি নামে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত এসেছে। ২০২৩ সাল থেকেই এটা কার্যকার হবে।’

দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ থাকছে না জানিয়ে  শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় সবাইকে একই বিষয় পড়তে হবে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনও বার্ষিক পরীক্ষা থাকবে না। এখন থেকে তিনটি পাবলিক পরীক্ষা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

দীপু মনি আরও বলেন, ‘একটি সমন্বিত পাঠ্যক্রম থাকবে এই পর্যায়ে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি বিষয় ঠিক করা হয়েছে। সেগুলোই সবাই পড়বে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গিয়ে ঐচ্ছিক বিষয়গুলো পড়বে শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্যে বিভাজন হবে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে।’

শিক্ষামন্ত্রী জানান, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষায় বসবে শিক্ষার্থীরা। দশম শ্রেণি সমাপনী পরীক্ষা এসএসসি আর একাদশ ও দ্বাদশ সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে প্রকাশ করা হবে এইচএসসির ফল।

আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের পাইলটিং চলবে ২০২২ সালে। আর শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৩ সাল থেকে। ২০২৫ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম বাস্তায়ন করা হবে।

২০২৩ সালে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করতে পারবো জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২৩ সালে প্রাথমিকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এটি চালু হবে এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে করবো। ২০২৪ সালে প্রাথমিকের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি। ২০২৫ সালে পঞ্চম শ্রেণি ও মাধ্যমিকের দশম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করবো।

দক্ষতা অর্জনের বিভিন্ন কৌশল এই পরিমার্জিত কারিকুলামে বলা আছে উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি আরও বলেন, ‘শিখন সময় প্রাথমিকে কতটা, মাধ্যমিকে কতটা হবে তা বলা আছে। আমরা সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্তিমূলক যে বিষয়টি এনেছি, সেখানে ফ্লেক্সিবিলিটি নিয়ে আসা হয়েছে। শারীরিক, মানসিক, সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

২০১১ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণি সাময়িকী পিইসি, অষ্টম শ্রেণি সাময়িকী জেএসসি পরীক্ষা চালু করা হয়। অথচ ২০১০ সালের বহুল আলোচিত জাতীয় শিক্ষানীতিতে এ রকম কোনো সুপারিশ ছিল না।

২০১১ সালে যখন জেএসসি পরীক্ষা চালু হয়, তখন যুক্তি দেখানো হয়েছিল, সরকারি চাকরিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগে ন্যূনতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। কিন্তু অনেক প্রার্থী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত না পড়েই স্কুল থেকে সনদ নিয়ে চাকরির জন্য আবেদন করে থাকেন। কিন্তু ২০১৬ সালে এই পদে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয় দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা।

Link copied!