নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে শুক্রবার ( ১৭ নভেম্বর ) দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে দেশের ১১ জেলায় আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিধিলি’।
সাগরে গভীর নিম্নচাপের কারণে অগ্রহায়ণের শুরুতে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে আকাশ ছিল মেঘলা। পরে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করছে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের দিকেই আসছে। পটুয়াখালীর খেপুপাড়া থেকে চট্টগ্রামের উপকূলের মাঝবরাবর এটি চলে যাবে। ভোলা জেলার দিকেই এর মূল অংশ যেতে পারে।
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটি খুব বড় আকারের হবে না বলে ধারণা করছেন আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, এটি ছোট আকারের ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তবুও এর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আর এটি ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঝড়টি বাংলাদেশের মোংলা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝ দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসতে পারে। ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কে দাস এ তথ্য জানান।
নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি সারাদেশে শীত নামিয়ে আনতে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা। তিনি জানান, নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার পর কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ মাসের শেষ দিকে আবার একটি নিম্নচাপ হতে পারে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়টি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামে আঘাত হানতে পারে।
তিনি আরও জানান, যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপদসংকেত দেওয়া হবে। সেটি সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিরূপ আবহাওয়ায় পাকা আমন ধান নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি, বসতবাড়ি ও ফসল নষ্ট হয়।