যে ১০টি মেডিকেল টেস্ট পুরুষদের জন্য জরুরি

ফারহানা জিয়াসমিন

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০৭:১২ পিএম

যে ১০টি মেডিকেল টেস্ট পুরুষদের জন্য জরুরি

ছবি: সংগৃহীত

অনেক দিন ধরেই শরীর খারাপ লাগছে কিন্তু পাত্তা দিচ্ছেন না, এমন অনেকেই করে থাকেন। আর যখন শরীরে আকস্মিক এক রোগের আঘাত আসে তখন মাথায় বাজ পড়ে এমন রোগ শরীরে বাসা বাঁধলো কীভাবে! এই হঠাৎ আগমন করা রোগ নিয়ে মাথায় বাজ পড়া থেকে রক্ষা পেতে চাইলে সঠিক সময়ে সঠিক টেস্ট করিয়ে শরীরের আপডেট জেনে রাখা জরুরি।

স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সঠিক স্ক্রিনিং টেস্ট সময়মতো করে নেয়া উচিত। উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে রোগের আশঙ্কা ধরে ফেলতে চাইলে করতে হয় স্ক্রিনিং টেস্ট। যেমন- বয়স বেশি, শরীর স্থূল, শুয়ে-বসে থাকা জীবন, অনেক মানসিক চাপ— এসবের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে স্ক্রিনিং টেস্ট করা আবশ্যক।

বিশেষ করে আপনার বা পরিবারের পুরুষ সদস্যটির যে ১০টি স্ক্রিনিং টেস্ট জরুরি-

ফুসফুসের ক্যানসার 
এই ক্যানসারের প্রধান কারণ হলো ধূমপান। যারা অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া দীর্ঘদিন গ্রহণ করে, তারাও এই ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। ফুসফুসে ক্যানসার আছে কি না জানার জন্য স্ক্রিনিং টেস্ট হলো লো ডোজ সিটি স্ক্যান। বয়স ৫৫ থেকে ৮০ হলে আর খুব বেশি ধূমপানের ইতিহাস থাকলে এই স্ক্রিনিং টেস্ট করতে হয়।

প্রোস্টেট ক্যানসার
পুরুষের অন্যতম প্রধান ক্যানসার এটি। এই ক্যানসার ধীরে ছড়ালেও অনেক সময় তা হতে পারে আগ্রাসী। এর স্ক্রিনিং টেস্ট হলো ডিজিটাল রেক্টাল এবং রক্তের পিএসএ টেস্ট। পিএসএ ৫০ হলে গড়পড়তা ঝুঁকি আর ৪৫ হলে উচ্চ ঝুঁকি বলে জানিয়েছে আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি।

টেস্টিকুলার ক্যানসার 
এই ক্যানসার খুব কম দেখা যায়। হলে ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে হতে পারে। আগে নির্ণয় করা গেলে এর চিকিৎসা সহজ। আর তাই শুক্রথলিতে কোনো গুটি, স্ফীতি বা শুক্রাশয়ের আকার-আয়তনে পরিবর্তন হলো কি না, নিজেকেই পরীক্ষা করতে হবে।

কলোরেক্টাল ক্যানসার 
কোলনের ভেতরের আস্তরণে ছোট গ্রোথ বেড়ে একসময় ক্যানসার হয়। তাই এটি হওয়ার আগে পলিপ খুঁজে একে অপসারণ করা গেলে এ ধরনের ক্যানসার থেকে বাঁচা যায়। এর আসল পরীক্ষা হলো কলোনস্কপি। কোলন পরীক্ষা করে পলিপ পেলে তা সরিয়ে ফেলতে পারেন চিকিৎসক। 

ত্বকের ক্যানসার 
অনেক রকমের স্কিন ক্যানসার আছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো মেলানমা। রোদের আলোয় শরীর বাদামি করা কিংবা খররোদে বেশি সময় থাকা এর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন ত্বক পরীক্ষা করুন। কোনো দাগ, ছোপ, তিল, আঁচিলে পরিবর্তন হয় কি না, এর আকার, আয়তন বা রঙের বদল কী হলো, তা খেয়াল রাখুন।

উচ্চ রক্তচাপ
বয়স, ওজন আর জীবনযাপনের সঙ্গে এটি জড়িত। অনেকের উচ্চ রক্তচাপ আছে, কিন্তু জানে না। স্ক্রিনিং করলে পাওয়া যাবে দুটি সংখ্যা, সিস্টলিক আর ডায়াস্টলিক। রক্তচাপ ১২০ বাই ৮০-এর নিচে থাকলে ভালো আছে বোঝা যাবে।

কোলেস্টেরল
রক্তে খুব বেশি মন্দ কোলেস্টেরল এলডিএল থাকলে হৃদ্‌রোগ আর স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে লিপিড প্রোফাইল করা আর ঝুঁকি বেশি হলে কম বয়সে স্ক্রিন টেস্ট করা দরকার। কোলেস্টেরল এলডিএল, এইচডিএল ট্রাইগ্লিসারিয়াইড মান খেয়াল করে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলতে হবে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস
অধিকাংশ মানুষ জানে না তাদের ডায়াবেটিস আছে। এই রোগ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে হতে পারে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ কিংবা অন্ধত্ব। এ জন্য খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ আর এআইসি টেস্ট করে নেয়া প্রয়োজন।

গ্লুকোমা
স্ক্রিনিং টেস্ট হলো চোখের ভেতর উচ্চ চাপ আছে কি না, সেটা পরীক্ষা করা। গ্লুকোমা নির্ণয়ে ৪০ বছর বয়স থেকে স্ক্রিনিং করা উচিত।

সঠিক সময়ে সঠিক টেস্ট করিয়ে নিন। সুস্থ থাকুন। 

Link copied!