ভাগনারগ্রুপের প্রধান কি নিহত, নাকি কারাগারে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলাই ১৫, ২০২৩, ১২:৫৮ পিএম

ভাগনারগ্রুপের প্রধান কি নিহত, নাকি কারাগারে?

সংগৃহীত ফাইল ছবি

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুগের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন কোথায় আছেন তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। এমতাবস্থায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বা কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘ভাগনার বাহিনীর কোনো অস্তিত্ব নেই’ বলে ঘোষণার পর এই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

গত জুনে ইয়েভগেনির নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে ভাগনার গ্রুপের যোদ্ধারা। ওই বিদ্রোহকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এই গ্রুপের যোদ্ধারা ২৩ জুন ইউক্রেন সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে দক্ষিণের বড় একটি শহর রোস্তভ অন ডন দখল করে নেয়ার পর রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে থাকলে মস্কোতে সন্ত্রাস-বিরোধী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়।

২৩-২৪ জুন বিদ্রোহের সময় দক্ষিণ রাশিয়ার শহর রোস্তভ-অন-ডন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল ভাড়াটে সেনারা এবং মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় অজ্ঞাত সংখ্যক সামরিক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে তারা। 

পরে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কড়া হুঁশিয়ারিতে ভাগনার নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন তার বাহিনীর মস্কোর অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ইয়েভগেনি প্রিগোজিন রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে অবস্থান করে। তবে কিছুদিন পরেই লুকাশেঙ্কো জানান, ইয়েভেগেনি আর বেলারুশে নেই। এরই মধ্যে ভাগনার বাহিনীর শত শত যোদ্ধা তাদের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম রুশ বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে।

ভাগনার গ্রুপের প্রধানকে সবশেষ দেখা যায় বিদ্রোহের ছয় দিন পর ২৯ জুন। ওইদিন  প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনসহ মোট ৩৫ জন কমান্ডার সাক্ষাৎ করেন।

ওই সাক্ষাতের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে একটি রুশ সংবাদমাধ্যমকে পুতিন বলেন, দেশে বেসরকারি সামরিক সংস্থার কোনো আইন নেই। স্পষ্টতই এর (ভাগনার গ্রুপ) কোনো অস্তিত্ব নেই।

রুশ প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যে বিশ্লেষকদের ধারণা- ভাগনার গ্রুপ প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে হয়তো হত্যা করা হয়েছে, নয়তো কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। ভাগনার গ্রপের বিদ্রোহ ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তাই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।  

মার্কিন সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল রবার্ট আব্রামস ভাগনারপ্রধান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে বলেন, “আমার মনে হয়, ইয়েভগেনি প্রিগোজিন হয় আত্মগোপনে আছেন বা কারাবন্দি আছেন অথবা অন্যকিছু হয়েছে। তবে, আমরা আর কখনোই তাকে প্রকাশ্যে দেখতে পাব কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান।” প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে ভাগনারপ্রধানের সাক্ষাত নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন মার্কিন বাহিনীর কোরিয়া ফোর্সের এই  কমান্ডার।

অপরদিকে, সাবেক মার্কিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কেভিন রায়ান অবশ্য প্রিগোজিনের নিহত হওয়ার দাবি মানেননি। তিনি নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেন, “আমার মনে হয় না, ভাগনাপ্রধান নিহত হয়েছেন। এমনটি হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তা কোনোভাবেই গোপন রাখতেন না। আর তাছাড়া তার নিহত হওয়ার কোনো প্রমাণও পাইনি।”

Link copied!