অক্টোবর ৮, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
গাজা যুদ্ধে ইউরোপের যে দুই দেশ প্রবলভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এর একটি ইতালি অন্যটি জার্মানি। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন যে গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় রোমের সমর্থনের কারণে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ‘গণহত্যায় সহযোগিতা’র অভিযোগ এনেছে।
বুধবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলকে মারণাস্ত্র সরবরাহ করে ইতালির সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে সেই বিষয়টি সামনে এনে গত ১ অক্টোবর রোমে অবস্থিত এই আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরএআইয়ে এক সাক্ষাৎকারে মেলোনি এসব তথ্য জানান। তবে আন্তর্জাতিক আদালত বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বলেও সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মেলোনি বলেন, তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানির ভূমিকার ‘নিন্দা’ করা হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করেন, ইতালির অস্ত্র ও আকাশসীমা দেখভালের প্রতিষ্ঠান লিওনার্দোর প্রধান রবের্তো সিনগোলানির নামও জড়িয়ে যেতে পারে।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মেলোনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে আইনের অধ্যাপক, আইনজীবী ও বেশ কয়েকজন সুপরিচিত ব্যক্তিসহ যোট ৫০ জন সই করেছেন। তারা মেলোনি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন।
অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সরকারকে সমর্থনের মাধ্যমে বিশেষ করে, প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করে ইতালি সরকার চলমান গণহত্যায় সহায়তা করেছে। তারা ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে চরম যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন।’
গত মাসে জাতিসংঘের তদন্তে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রসঙ্গে উঠে আসে। মানবাধিকারকর্মী, গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরাও একই ধারণা পোষণ করেন।
গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘণ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে আইসিসি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য বলছে—২০২০ সালে থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহকারী তিন দেশের একটি ইতালি। বাকি দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি।
ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে সই করা চুক্তি অনুসারে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। সেসব অস্ত্র যেন গাজায় বেসামরিক মানুষদের ওপর প্রয়োগ করা না হয় তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে বলা হয়েছে।
উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি দাবি করেছেন, ইসরায়েলে সব ধরনের অস্ত্র সরবরাহ এখন বন্ধ আছে।
এ দিকে, দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন অমান্যের অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা মামলা করেছে।