২০২২ সালে তীব্র খাদ্য-সংকটে ভুগেছেন বিশ্বের অন্তত ৭৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। ২০১৯ সালের তুলনায় এই সংখ্যা ১২ কোটিরও বেশি। এই তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের খাদ্য, কৃষি এবং পরিবেশ সংক্রান্ত পাঁচটি বিশেষায়িত সংস্থার এক প্রতিবেদনে। বিশ্ব ক্রমেই তীব্র খাদ্য সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাগুলো।
বুধবার (১২ জুলাই) বাৎসরিক ‘স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের বৈশ্বিক খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (ফাও), ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি), ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী।
যৌথ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে যত বিশ্বজুড়ে যত মানুষ তীব্র খাদ্য-সংকটে ভুগেছে দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিরাজ করা করোনা মহামারির কারণে সেই সংখ্যায় যোগ হয়েছে আরও প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৯ সালে জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা হাসিলের মাধ্যমে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু বর্তমানে যে হারে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব নয়। উল্টো এই সময়সীমার মধ্যে আরও ৬০ কোটি মানুষ নতুন করে এই তালিকায় যুক্ত হবে।’
ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো কালেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, এটি আমাদের জন্য খুবই খারাপ সংবাদ।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও গৃহযুদ্ধ, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা দুর্যোগের কারণে গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বজুড়ে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
বিশ্বের কিছু অংশে অবশ্য খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ার অনেক দেশের খাদ্য সংকট এখন নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ক্যারিবীয় অঞ্চল, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে দিন দিন এই সংকট বাড়ছে।