জুলাই ৬, ২০২৩, ০৭:২১ পিএম
রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত প্রিগোঝিনের বিলাসবহুল বাড়ি থেকে এসময় বিপুল পরিমাণ অর্থ, সোনা, অস্ত্র, ছদ্মবেশ ধারণের সরঞ্জাম এবং বিশ্বাসঘাতকদের নির্যাতনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করে পুতিন ও রুশ সেনাবাহিনীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রিগোঝিন। এসময় তার অনুগত বাহিনী মস্কো অভিমুখে যাত্রা করে। পরবর্তীতে বেলারুশ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর হস্তক্ষেপে মস্কো অভিযান বাতিল করে ওই দেশে আশ্রয় নেন প্রিগোঝিন। এরপরই ভাগেনার গ্রুপের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে যায় রুশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুতিন প্রশাসন।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার তল্লাশি চালানোর বিষয়টি ফাঁস করেছে রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল।
বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে প্রিগোঝিনের বাড়ির ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ, সোনা, অস্ত্র, ছদ্মবেশ ধারণের সরঞ্জাম এবং বিশ্বাসঘাতকদের নির্যাতনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বুধবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় একটি টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত ‘৬০ মিনিট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে গত ২৪ জুন ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা মালামালের ছবি এবং ফুটেজ প্রকাশ করা হয়।
উদ্ধার করা মালামালের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বড় বক্স যেগুলো রাশিয়ান মুদ্রা রুবলে ভর্তি। বেশ কয়েকটি পরচুলা উদ্ধার করা হয় যেগুলো দিয়ে প্রিগোঝিন ছদ্মবেশ ধারণ করতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তল্লাশি অভিযানে বিপুল পরিমাণ গুলিসহ বেশ কিছু ভারী অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। একটি হাতুড়িবিশেষ বস্তুও উদ্ধার করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, বিশ্বাসঘাতকদের ওই হাতুড়ি দিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলতেন প্রিগোঝিন।
রুশ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, প্রিগোঝিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা নগদ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন রুবল বা ৬৬ লাখ ডলার। ছিল কয়েকটি সোনার বারও।
তবে, সম্প্রতি প্রিগোঝিন দাবি করেছিলেন, তাঁর বাড়ি থেকে অন্তত ১০ কোটি ডলার নিয়ে গেছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ান মুদ্রায় যা প্রায় হাজার কোটি রুবল। এসব অর্থ ভাগনার যোদ্ধাদের বেতন হিসেবে দেওয়া হতো বলেও জানান তিনি।
এদিকে, নিউইয়র্ক পোস্টসহ একাধিক মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ জনগণের মধ্যে প্রিগোঝিনের জনপ্রিয়তা কমাতেই তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা মালামালের ছবি ও ভিডিও ফাঁস করেছে কর্তৃপক্ষ।