লুটপাট করে মালামাল নিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া, অভিযোগ ইউক্রেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ১, ২০২২, ০২:১৮ পিএম

লুটপাট করে মালামাল নিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া, অভিযোগ ইউক্রেনের

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর হাতছাড়া হয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলোতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে  লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। কিয়েভের অভিযোগ,রুশ বাহিনীর দখলে যাওয়ার পর,ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিওপোল থেকে প্রথমবার ধাতব পণ্যবাহী একটি জাহাজ রাশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। আর পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর দাবি, ইউক্রেন থেকে শস্য চুরি করেছে পুতিন সরকার।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আজভ সাগর তীরের বন্দর শহর মারিওপোল পূর্ণ দখলে নেয়ার পর ওই বন্দর ছেড়ে যাওয়া ধাতব পাত বোঝাই একটি কার্গো জাহাজকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর বন্দর ছেড়ে যাওয়া প্রথম জাহাজ এটিই। জাহাজটিতে রয়েছে আড়াই হাজার টনেরও বেশি ধাতব পাত। জেলেনস্কি প্রশাসনের অভিযোগ, ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর দখলের পর লুটপাট চালিয়েছে রুশ বাহিনী। তারপর জাহাজ বোঝাই করে লুটকরা পণ্য নিজ দেশে নিয়ে যাচ্ছে তারা।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য চুরির অভিযোগও উঠেছে ।  রয়টার্স, সিএনএন, এএফপিসহ পশ্চিমা বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, রুশ পতাকাবাহী জাহাজ ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। ওই গণমাধ্যম প্রমাণ হিসেবে স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের রাজনীতিবিদ ল্যুদমিলা দেনিসোভা জানিয়েছেন ইউক্রেনের অস্থায়ীভাবে দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে লুটপাট অব্যাহত রেখেছে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।শস্য চুরির পর দখলকারী আগ্রাসী বাহিনী মারিওপোল থেকে ধাতব পণ্য লুটে নিতে শুরু করেছে।

পিপলস রিপাবলিক অব দোনেৎস্কের প্রধান ডেনিস পুশিলিন বলেন, এই জাহাজগুলো পিপলস রিপাবলিক অব দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এগুলোর নাম পরিবর্তন করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও আমরা সিদ্ধান্ত নেইনি। কিন্তু এসব জাহাজে কোন পতাকা থাকবে সেটা কারও অজানা নয়।

ইউক্রেনে অভিযানের শুরু থেকেই মারিওপোলে দিকে সবচেয়ে বেশি নজর ছিল রাশিয়ার। মার্চের শুরুতেই শহরটি ঘিরে ফেলে রুশ বাহিনী। তবে বিশাল ইস্পাত কারখানায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইউক্রেনের সেনারা। চলতি মাসে তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলে মারিওপোল পূর্ণ দখলে নেয় রাশিয়া।

প্রসঙ্গত, উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করা নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় মস্কো-কিয়েভের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো।

তবে ওই কৌশল কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এর দুদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে।

Link copied!