তথ্য সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, মানবতা বিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে দাবি করে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ২২ জন তথ্য সন্ত্রাসী রয়েছে। এদেরকে জবাব দিতে হবে। নোংরা জিনিস ফেসবুকে দেখামাত্র ফ্লাশ করা দরকার। এর বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্যকে উপস্থাপন করতে হবে, তাহলেই মিথ্যার পরাজয় ঘটবে। আপনি যে মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই বিশ্বাসে যদি চ্যাম্পিয়ন হন, তাহলে আপনাকেই সেটি পালন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সফররত আইজিপিকে জ্যাকসন হাইটসের কাছে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে সংবর্ধনা দেয় যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি। এ সময় আইজিপি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আইজিপি আরও বলেন, এক সময় মনে করা হয়েছিল যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাংবাদিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। কিন্তু ‘বাস্তবে কী দেখছি আমরা’- এ প্রশ্ন রেখে পুলিশ প্রধান বলেন, আশা করা হয়েছিল সমাজের তথ্যচিত্র সবিস্তারে উঠে আসবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে যত ভুয়া, আজগুবি তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা সংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছি। এখন চলছে মুক্তির লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে। দেশের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা রুখে দিতে হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, তারা অভিযোগ করেছেন ২০০৯ সাল থেকে নাকি র্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছে। অথচ আমি র্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেওয়া হয়েছে?
আইজিপি বলেন, আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই, যারা ৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল।
তিনি বলেন, ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞার) জন্য।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ২০০৯ সালে আমি এই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে চাকরিতে ছিলাম। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে ৬০০ লোক গুমের অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কোনো তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার চলমান লড়াইয়ে আমি সবার সঙ্গে রয়েছি। দেশকে সবার আগে রেখে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার পথকে সুগম রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা হিন্দাল কাদির বাপ্পা। এতে অন্যান্যের মধ্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে আইজিপি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন।