চট্টগ্রাম মহানগরীর ফিরিঙ্গি বাজারের ফিশারি ঘাট সংলগ্ন লইট্টার ঘাট বস্তিতে আগুনের ঘটনায় অন্তত ২০০ ঘর পুড়ে গেছে। আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ শেষে সোমবার রাতে ফায়ার সার্ভিস এই ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানায়।
এর আগে সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে এই আগুনের সূত্রপাত। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বস্তিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে নন্দনকানন, লামারবাজার, চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের ৯টি ইউনিট পৌঁছে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, ‘আগুন আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। প্রাথমিকভাবে আমরা প্রায় ৮৭টি কক্ষ পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।’
ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, ‘বস্তিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে যাই। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ’
পূর্ণাঙ্গ তথ্য না মিললেও প্রায় ২০০ ঘর পুড়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কত লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা তালিকা করে জানাতে বলেছেন উনারা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখা হবে।
স্থানীয়রা জানান, বস্তির এসব ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। তবে আগুন লাগার পর তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলো বের করে ফেলা সম্ভব হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
বস্তির বাসিন্দা মো. ফারুক বলেন, ‘সকালে কাজে বেরিয়েছিলাম। ১২টার দিকে বাসায় এসে ভাত খেয়ে একটু ঘুমাচ্ছিলাম। সাঈদুলের (প্রতিবেশীর) ডাকে ঘুম ভাঙলে উঠে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ততক্ষণে ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই।’
ক্ষতিগ্রস্থ সাবরিনা বেগম বলেন, ‘আল্লাহ আমারে কি পরীক্ষায় ফেলেছে জানি না। ঈদের পর মেয়ের বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা কর্জ করে ঘরের আলমারিতে রেখেছিলাম। আগুনে আমার সব শেষ।’
প্রত্যক্ষদর্শী সালাউদ্দিন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক তারের উপর একটি নারিকেল গাছের ডাল পড়েছিল। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।’