ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩, ০২:০৫ এএম
১৯৯৯ সালে প্রথম বিয়ে করেন রবিজুল ইসলাম (৩৯)। এরপর জীবিকার সন্ধানে লিবিয়ায় পাড়ি জমান। এর মধ্যেই তিনি তিনটি বিয়ে করেন। দীর্ঘদিন সেখানে থেকে বছর দুয়েক আগে দেশে ফেরেন। ফিরে একে একে আরও তিনটি বিয়ে করেন রবিজুল।
মায়ের মানত পূরণ করতে সাতটি বিয়ে করেছেন বলে জানান তিনি। এর মধ্যে গত তিন মাসে তিনটি বিয়ে করেছেন তিনি। আর অবাক করা বিষয় হলো, তার স্ত্রীরাই মিলে তার বিয়ে দিয়েছেন।
এখন সাত স্ত্রীকে নিয়ে এক বাড়িতে মিলেমিশে থাকেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ি গ্রামের মিয়াপাড়ার এই বাসিন্দা। জানান, সংসারে নেই কোনো অশান্তি।
রবিজুলের স্ত্রীরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হালসা গ্রামের রুবিনা খাতুন (৩৫), একই উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর এলাকার মিতা আক্তার (২৫), কিশোরগঞ্জের হেলেনা খাতুন (৩০), চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরুন নাহার (২৫), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বপ্না (৩০), একই উপজেলার ডম্বলপুর এলাকার বানু আক্তার (৩৫) ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার রিতা আক্তার (২০)।
প্রথম স্ত্রী রুবিনা, তাদের দুটি ছেলে আছে। ২০১৪ সালে লিবিয়ায় থাকাকালীন বিয়ে করেন হেলেনাকে, এই স্ত্রীর এক ছেলে এক মেয়ে। ২০২০ সালে করোনাকালে নুরুন নাহারকে বিয়ে করেন, এই পক্ষে এক মেয়ে। এর দুই বছর পর ২০২২ সালে বিয়ে করেন স্বপ্নাকে। চলতি বছরে এসে বিয়ে করেন বানুকে, তারপর জুঁই আক্তারকে এবং দুই মাস আগে তার সপ্তম স্ত্রী হন মিতা।
সবগুলো বিয়েই পারিবারিকভাবে এবং আগের স্ত্রীদের সম্মতিতে হয়েছে বলে দাবি করে রবিজুল জানান, সর্বশেষ বিয়েটি করিয়েছেন আগের ছয় স্ত্রীই।
এ নিয়ে রবিজুলের ষষ্ঠ স্ত্রী জুঁই বলেন, ‘আমরা ছয়জন মিলে স্বামীর সপ্তম বিয়েটি দিয়েছি। সর্বশেষ বিয়ের সাক্ষীও ছিলাম আমরা।’
রবিজুল বলেন, ‘আমি মা-বাবার একমাত্র ছেলে। ছোটবেলায় আমার একটা শারীরিক সমস্যা ছিল। সেজন্য মা মানত করেছিলেন, ছেলে বেঁচে থাকলে সাতটি বিয়ে দেবেন। মায়ের সেই মানত পূরণ করতে আমি সাতটি বিয়ে করেছি। এতে আমি, আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী সবাই খুশি। স্ত্রীরাও সবাই খুব ভালো। তাদের মধ্যে কখনো ঝগড়া-বিবাদ হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাত স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সুখের সংসার আমার। সব স্ত্রীই আমার যত্ন নেন এবং খুব ভালোবাসেন। সারাদিন সবাই একসঙ্গে কাজবাজ করেন। সপ্তাহের সাত রাতে সাত বউয়ের কাছে থাকি। এতে কোনো সমস্যা হয় না।’
সাত বোনের মতো মিলেমিশে থাকেন জানিয়ে রবিজুলের স্ত্রীরা বলেন, ‘আমরা জেনে-শুনেই বিয়ে করেছি। আমাদের স্বামী এমন কিছু করেন না যাতে আমাদের মন খারাপ হবে। স্বামী খুবই ভালো মানুষ।’
দীর্ঘদিনের প্রবাসী রবিজুল এখন ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। একটি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু করেছেন। এছাড়াও ভাড়ায় চালিত কয়েকটি মাইক্রোবাস রয়েছে তার।
রবিজুল সাত স্ত্রীকে নিয়ে একই বাড়িতে মিলেমিশে সংসার করে ভালোই আছে বলে জানান প্রতিবেশিরাও।