ডিসেপশন আইল্যান্ড দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ। যেখানে আগ্নেয়গিরি হওয়া সত্ত্বেও জাহাজে করে সেখানে যাওয়া যাবে।
যে কেউ জাহাজের সুসজ্জিত ডাইনিং রুমে প্রবেশ করলে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। কারণ, সেখানে নানা দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা হবে। সেই হাস্যোজ্জ্বল মানুষেরা প্রাণ খুলে কথা বলে।
দ্বীপে নামলে দেখা যাবে, চারদিকে পাহাড়ঘেরা। মনে হবে, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব। চারদিকে ছাই রং, বরফ-সাদার আধিক্য কম। ‘এটাই ডিসেপশন আইল্যান্ড।’ দ্বীপটি ঘোড়ার নালের আকৃতির।
ডিসেপশন আইল্যান্ড এটি একটি নিরাপদ প্রাকৃতিক পোতাশ্রয়। এখানে বিভিন্ন সময় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আবদ্ধ বৃত্তাকার উপসাগর তৈরি হয়েছে। সক্রিয় আগ্নেয়গিরির ঝুঁকি থাকলেও অনেক জাহাজ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। কেউ কেউ এটিকে দক্ষিণ তীরের অগ্নিশিখা বলে। সে উপকূল কাঁকরযুক্ত কালো বালুকাময়। কালো বালুর মধ্য দিয়ে সবাই হাতের বাঁয়ে পথ ধরে হেটে বেড়ায়। পথ ভেজা ও কর্দমাক্ত।
দূরে কিছু ভাঙা বাড়ি দেখা যাবে। এই ভাঙা বাড়িগুলো একটি ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক স্টেশন। নাম বিসকো হাউস। রয়্যাল নেভির মাস্টার জন বিসকোর নামে নাম হয়েছে ‘বিসকো হাউস’।
সেই ঘরের ভেতরে কিছু আসবাব কোনোমতে টিকে আছে, তবে বরফে ঢেকে আছে বলে সেগুলোর আকার ভালো করে বোঝা যাবে না। এই দ্বীপ অস্থায়ী তিমি শিকারের স্টেশন ছিল। এই বাড়িগুলো স্টেশনের ডরমিটরি। এখন পরিত্যক্ত। পর্যটকদের জন্য অ্যান্টার্কটিকার সেরা আকর্ষণগুলোর একটি এটি।
একেবারেই সমতল উপকূলের মাঝখানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে মরিচা ধরা বয়লার ও ট্যাংক। কতকগুলো দাঁড়িয়েই আছে, কিছু পরিত্যক্ত। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। আচমকা দেখলে মনে হবে, কোনো ধ্বংস হয়ে যাওয়া শিল্পকারখানা। এই দ্বীপে তিমি ও সিল নিধন হতো, তিমির তেল আহরণ করা হতো, সেই তেল রাখা হতো এমন বৃহৎ আকারের ট্যাংকে। মনে হবে এটি একটি উন্মুক্ত জাদুঘর ।