নিখুঁত চকচকে কামানো গাল নয়, বরং দাড়িওয়ালা ছেলেদের দিকেই টান (ক্রাশ) বেশি মেয়েদের! বিশ্বের নানা দেশে মেয়েদের ওপর করা অসংখ্য জরিপে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। অনেক পোর্টালের 'নিখুঁত আর মসৃণ শেভ করবেন যেভাবে' এমন সংবাদের মন্তব্য কলামেও মেয়েরা দাড়ির পক্ষ নিয়েছেন। কিন্তু কেন মেয়েরা দাড়ির প্রতি এমন আকৃষ্ট হয়? আজ ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ব দাড়ি দিবসে জেনে নেওয়া যাক সেসব তথ্য।
Evolution and Human Behavior নামের এক জার্নালের করা ৭০০ নারী-পুরুষের ওপর এক জরিপে দেখা যায়, তাদের সিংহভাগই দাড়িওয়ালা পুরুষকে 'আকর্ষক' বলে মত দিয়েছেন।
কাউকে ভালোবাসার জন্য খুব বড় কোনো কারণের প্রয়োজন হয় না৷ একেক জনের হিসেব একেক রকমের৷ অনেক ছেলে যেমন মেয়েদের রূপেই হুট করে মজে যায়৷ আর তেমনটা মেয়েদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে৷ মজার বিষয় হল, ছেলেদের দাড়ি এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর বা অণুঘটক হিসেবে কাজ করে৷
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মেয়ের বাবা বা দাদার দাড়ি ছিল তারা স্বাভাবিকভাবেই অনুভব করে যে, যাদের দাড়ি আছে তারা অনেক বেশি আকর্ষণীয়৷ কারণ এসব মেয়েরা নিজের বাবা ও দাদাকেই বেশি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও আকর্ষণীয় মনে করে৷
এ ছাড়া ছেলেদের দাড়ির প্রতি মেয়েদের দুর্বলতার আরো যেসব তথ্য মেলে তাতে অবাক হতে হবে আপনাকে। এসব তথ্য নানা জরিপে মেয়েদের কাছ থেকেই পাওয়া।
পুরুষালি বৈশিষ্ট্য
দাড়ির কারণে চেহারার ওপর আলাদা একটা রেখা দেখা যায়, যা পুরুষদের পুরুষালি বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে এটি নারীদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।এই আকর্ষণ বোধ থেকে নারীরা অবচেতন মনে পুরুষের প্রেমে পড়ে যায়!
পরিণত মানুষ
দাড়ির কারণে একজন পুরুষকে অনেক বেশি পরিণত মনে হয়। আর নারীরা সাধারণত পরিণত পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক জড়াতে পছন্দ করে। তারা নিজেকে তার কাছে নিরাপদ ও অনেক শক্তিশালী মনে করে।
দায়িত্বশীল ও সাহসী মানুষ
দাড়িওয়ালা পুরুষদের অনেক বেশি দায়িত্বশীল ও সাহসী মনে করেন নারীরা। তাদের কাছে থাকতে তারা নিরাপদ বোধ করেন। নারীদের ভাষ্যমতে, এরা শুধু দায়িত্বশীলই নন, অনেক সাহসীও হয়ে থাকেন।
আকর্ষক
দাড়িওয়ালা পুরুষদের দেখলে অনেক বেশি আকর্ষণ অনুভব করে নারীরা। কারণ দাড়ি ছাড়া পুরোপুরি শেভ করা পুরুষদের তারা মনে করেন এরা শিশুতোষ! আর দাড়িওয়ালা পুরুষদের দেখতে পরিণত মনে হয়, তাদের প্রতি বেশি আকর্ষণ অনুভব করেন নারীরা।
মেয়েদের যুক্তি, আপনি যদি একই মানুষের দাড়ি ছাড়া ও দাড়িসহ ছবি দেখেন, তাহলে নিজেই পার্থক্যটা অনুভব করতে পারবেন৷ আর সেই পার্থক্যটা হলো– দাড়িসহ একটা ছেলেকে সত্যিই শক্তিশালী মনে হয়!
দাড়ি নিয়ে বোনাস আরও ৭
১. বিশ্বজুড়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, দাড়িওয়ালা লোকেরা হিংসুটে কম হয়। এঁরা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। এরা শুরুতে মানুষের সঙ্গে মিশতে ইতস্তত বোধ করেন। কিন্তু একবার আপনার সঙ্গে মিশে গেলে, আপনি এই মেলামেশাটা উপভোগ করবেন। দাড়িটা এক্ষেত্রে ওই মানুষদের ব্যক্তিত্বকে চাদরে ঢেকে রাখার মতো একটা কাজ করে।
২. বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা করে মানুষের মনস্তত্ব দেখে বুঝেছেন, পুরুষ নিজে দাড়ি রাখতেই আগ্রহী। কিন্তু সে যখন তাঁর দাড়ি কেটে ফেলে, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাখ্যাটা থাকে কোনও মহিলাকে 'ইমপ্রেস' করা। এটি এক অর্থে আত্মবিসর্জনের নামান্তর।
৩. ২০০৮ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে মুখে দাড়ির 'ট্রান্সপ্লান্ট' ৬০০ শতাংশ হারে বেড়েছে! এর কারণ, ২০০৮ সালের পর থেকে সারা বিশ্বেই দাড়ি রাখার চল বেড়ে গেছে!
৪. মধ্যযুগে কোনও মানুষের দাড়িতে হাত দেওয়া ছিল মারাত্মক অপরাধ। মনে করা হত, যে ব্যক্তির দাড়িতে হাত দেওয়া হয়েছে, তাঁকে আসলে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে। সমাজে দাড়িওয়ালা মানুষের মূল্য ছিল এতটাই। এই জন্য কঠোর শাস্তিও দেওয়া হতো!
৫. একজন মানুষ যিনি পৃথিবীতে ৬০ বছর বেঁচে থাকেন হিসেব করে দেখা গিয়েছে, সেই মানুষটা জীবনের প্রায় ৩৫০০ ঘণ্টা সময় নষ্ট করেছেন তাঁর দাড়ি কাটতেই! মানে গোটা জীবনের প্রায় ৬ মাস চলে গেল দাড়ি কাটতেই!
৬. আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন জীবনের শুরুর দিকে দাড়ি রাখতেন না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাকে একটি ছোট মেয়ে একদিন চিঠি লেখে, 'আপনি যদি দাড়ি রাখেন, আপনাকে দেখতে সুন্দর লাগবে।' ব্যস, লিঙ্কন শুরু করে দিলেন দাড়ি রাখা। একবার ভেবে দেখুন, দাড়ি ছাড়া লিংকন দেখতে কেমন হতে পারতেন!
৭. অনেকের ত্বকের অ্যালার্জি থাকে। সেক্ষেত্রে ওষুধের থেকেও তাঁর কাছে মূল্যবান হতে পারে দাড়ি। এমনটা বলেন ডাক্তাররাই। দাড়ি রাখা মানুষদের গালের ত্বক তুলনায় কোমল হয়।
সূত্র: আস্কম্যান ডটকম, সাইকোলজি টুডে।