ভূমিকম্প, আফগান নারীদের পরিণতি এবং আমাদের ভীতি

শাকিলা জেরিন

নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ১১:৪৫ পিএম

ভূমিকম্প, আফগান নারীদের পরিণতি এবং আমাদের ভীতি

শাকিলা জেরিন

২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল নরসিংদী হওয়ায় ভূমিকম্পে তীব্র ঝাঁকুনিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা কেঁপে ওঠে। রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫ দশমিক ৭। আবহাওয়াবিদরা বলেছেন এই ভূমিকম্প গত কয়েক দশকে দেশের ভেতরে উৎপত্তি হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী। কম্পন শুরু হতেই মানুষ দ্রুত ভবন থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে আসে, কেউ আশ্রয় নেন ঘরের নিরাপদ স্থানে। ভূমিকম্পে তাইই করণীয়। গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১০, আহত কয়েক’শ মানুষ। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস জানিয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোট ১৪টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে মৃত্যু, আতংক আর অনেক ভবনের ফাটল। সেই সাথে দেখা গেছে সমাজের, মানুষের নৈতিকতার ও মনুষত্বের ফাটল। যা ভূমিকম্পের চেয়েও ভয়ংকর। 

ভূমিকম্পের মুহূর্তে মানুষ আতঙ্কে যেভাবে দৌড়ে বের হয়ে আসে, তা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। কিন্তু আজকের ভূমিকম্প আমাদের আরেকটি নগ্ন সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে— এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বাংলাদেশে যে নারীদের মানুষ নয় বরং একটি শরীর, একটি মাংসপিণ্ড হিসেবে দেখা হয়। ভূমিকম্পের পর থেকে ফেসবুক ছেয়ে গেছে নারীদের ওড়না নিয়ে নানান মন্তব্যে। দুই একটা উদাহরন দেখা যাক ফেসবুক পোস্ট ও মন্তব্যের- এক নারী লিখেছেন  “ভূমিকম্প হইলে মানুষ জান বাঁচায় আর মেয়েরা ওড়না খুঁজে।“ আরেক নারী লিখেছে “মরলে পর্দা নিয়ে মরবো। জান দিব ইজ্জত দিব না। সারাজীবন পর্দা করে যদি মৃত্যুর আগে পর্দাহীন ভাবে মরতে হয় এর চেয়ে আফসোস আর কি থাকে?” এক পুরুষ লিখেছেন “মুসলিম নারীরা ভূমিকম্পে নামার আগে সবার প্রথমে ওড়না কেন খোঁজে জানেন? কারণ তারা জানে, এ আযাব এসেছে আল্লাহর অবাধ্যতার কারণে। তারা জানে, জীবনের চেয়ে ইজ্জতের গুরুত্ব অনেক অনেক বেশি।“ “ওড়না খুজার জিনিস নয় মুমিন নারীদের মাথায় ওরনা প্রতিমুহূর্তে থাকা উচিত” সবচেয়ে হাস্যকর মন্তব্য ছিল অনেকেই এই ভূমিকম্পের জন্য নারীদের ওড়না না পরা, বোরখা না পরা, তাদের মতানুসারে বেপর্দা চলা ফেরা করাকেই দায়ী করছেন। 

কেউ নারীরা ওড়না ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় করছে কূটুক্তি, ব্যঙ্গ, নোংরা মন্তব্য। অনেকে বিষয়টি নিয়ে মজা করে বানাচ্ছে ভিডিও ও মিম। কেউবা বলছেন ভূমিকম্প যতটানা বাস্তবে হয়েছে তারচেয়ে বেশি ফেসবুকে ওড়না নিয়ে হচ্ছে। আসলেই কি এই মত-দ্বিমত, জাজমেন্ট, নোংরা মন্তব্যগুলো ফেসবুকে সীমাবদ্ধ? নাকি বাস্তবে ঘটছে বলেই ফেসবুকে আলোচনা হচ্ছে। আমার এক সহকর্মী ও তার পরিবারের সদস্যরা টি-শার্ট পরে নিচে নেমেছিল বলে তাদের প্রতিবেশি এক নারী সরাসরি কূটুক্তি করেছে। আজ এই ভূমিকম্পের ঘটনায় বিষয়টি আলোচনায় এলেও এর বিস্তার হয়েছে বহু আগেই, যা অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। 

কয়েক বছর আগে তেজগাও কলেজের সামনে টিপ পরার কারণে পুলিশের এক সদস্যের দ্বারা এক নারীর হ্যারাজমেন্টের শিকার হয়েছিলেন। নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে পোশাকের কারণে এক নারী লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। তখন ঘটনাগুলো প্রায়শই না ঘটলেও অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারীর পোশাক, জীবন যাপন নিয়ে এমন কূতুক্তি, লাঞ্ছনা,আক্রমনের ঘটনা নিত্যনৈমেত্তিক হয়ে উঠেছে। চারুকলার সামনে টি-শার্ট পরা নারীর গায়ে থুতু দেয়া, লালমাটিয়ায় দুই নারীকে মারধর থেকে শুরু করে ঘটনার তালিকা অনেক লম্বা। 

আজ কিংবা অতীতের প্রতিটি ঘটনাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, এই সমাজে নারীর অবস্থান। নারীর ওড়না, শালীনত, বা জীবনযাপন নিয়ে নোংরা মন্তব্য, হাসিঠাট্টা কিংবা মিম, নারীর শরীর, স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের সামাজিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থারই বহিঃপ্রকাশ। দুর্যোগের সময়ও যখন সমাজ নারী-দেহকে শাসন করার সুযোগ খুঁজে পায়, তখন বুঝতে হবে সংকট কেবল মাটির নিচে নয়—সংকট সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, মানুষের মনে, মস্তিষ্কে। দুর্যোগের চেয়েও ভয়াবহ হল এই মানসিকতার ভূমিকম্প; যা সমাজের ভিত্তিমূল কাঁপিয়ে দেয়। 

একটি বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের হলের ভূমিকম্পকালীন একটি সিসিটিভি ফুটেজ। বেশির ভাগ ছেলে হাফপ্যান্ট, লুঙ্গি পরা, অনেকেই খালি গায়ে, অনেকেই টি-শার্ট পড়া। শুধু হল নয় বেশিরভাগ আবাসিক একালারও একই চিত্র ছিল। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে, তাতে নারী-পুরুষ কারোর কোন সমস্যা হয়নি, ছেলেদের ইজ্জতও যায়নি, আল্লাহ্‌র গজবও সে কারনে আসেনি। এবং এই যে কারোর বিষয়টি লক্ষ্য না করা, এটাই স্বাভাবিক। অথচ মেয়েদের হলের কিংবা বাসার প্রত্যেকের একই অবস্থা, সবার আগে ওড়না খোঁজার দায়। ওড়না খোঁজা নিয়ে উপহাস করলেও এই একটি বিষয় চিৎকার করে জানান দিচ্ছে সমাজে এখনও নারী কেবল ভোগের বস্তু। যুগ যুগ ধরে শুনে আসা খোলা মিষ্টি আর খোসা ছাড়া কলার সেই কুৎসিত উদাহরনের বাস্তব প্রতিফলন। 

ভূমিকম্প, আফগান নারীদের পরিণতি এবং আমাদের ভীতি

চলতি বছর ৩১ আগস্ট রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই ভূমিকম্পে ২২০০ বেশি মানুষ নিহত ও ৩ হাজের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। নিহত ও আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য। 

আফগানিস্তান তালিবান সরকারের অধীনে শরিয়া আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। আর শরিয়া আইন মোতাবেক কোন বেগানা পুরুষ কোন নারীকে স্পর্শ করতে পারেনা। তালিবান সরকারের এই ফতোয়ার কারণে ভূমিকম্পের পরে এক নির্মম দুর্বিসহ চিত্র তৈরি হয়েছিল আফগানিস্তানে। ইট-কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যুর সাথে লড়াই করা নারীদের উদ্ধার করা হচ্ছিল না! বাঁচানো হচ্ছিল কেবল পুরুষদের। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত নারীদের। আবার নারীদের চিকিৎসা দিতে সক্ষম মহিলা ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব উদ্ধার পরবর্তী চিকিৎসা প্রাপ্তিকে বিলম্বিত করেছে। কারণ উদ্ধারকারী এবং ডাক্তার বেশিরভাগ পুরুষ। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত চারিদিক, বাঁচা-মরার সন্ধিক্ষণে মানুষ অথচ নারী বলে মৃত্যুই যেন তার প্রাপ্য। 

আফগানইস্তানের আজকের এই অবস্থা ও নারীদের এই পরিনতি কি একদিনে হয়েছে? তালেবান সরকার রাতারাতি সব চাপিয়ে দিয়েছে? ধর্মের নামে নারীদের নিয়ন্ত্রণের এই মানসিকতা যে কত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তার নির্মম চিত্র আফগানিস্তানের ভূমিকম্প। এ যেন সামাজিক বিধিনিষেধের নামে জীবন বঞ্চনার এক দৃষ্টান্ত—যেখানে লজ্জার দেয়াল মানুষের জীবন থেকেও উঁচু।

গণভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যে ইসলামপন্থি শক্তির উত্থান হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। ৩ মে ২০২৫ তারিখে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একটি মহা সমাবেশের আয়োজন করে, যা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সমাবেশে প্রকাশ্যে নারী কমিশনের নামে বেশ্যা কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতের নেতারা। আরও বলেছিলেন “নারী নামের হিজড়া”, “নারী পুরুষের পায়ের স্যান্ডেলও সমান হয়না”, “এই নারীদের কে তাদের সকল দাবীসহ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা হোক”। 

সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের ‘কল্যাণে’ বাংলাদেশের আরেকটি ইসলামিক দলের তরফে করা মন্তব্যগুলো এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য। নারীদের কর্মঘন্টা কমানো, যে নারী ঘরে থাকবে সরকার তাঁকে সম্মানিত করবে। আপত দৃষ্টিতে এই কথাগুলো নারীবান্ধব মনে হলেও আদতে তা অতন্ত্য সমস্যাজনক। একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা কাজ করা একজন পুরুষ কর্মী পাচ্ছেন সেখানে কেন একই বেতনে কম কর্মঘন্টার নারী কর্মী নেবে? আর ঘরে থাকলে নারীরা সম্মানিত হবেন, তাহলে কি কর্মজীবী নারীরা অসম্মানিত হবেন? এক ধরনের নিরব হুমকিই কি নয় এই মন্তব্য? নারীদের গৃহবন্দী করার কৌশল নয় কি?   

আরেকটি ঘটনার উল্লেখ্য, ১ জুলাই ২০২৫, ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিমকে খালেদ মুহিউদ্দীন শরিয়া আইন অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করেন, এখনকার কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে এমন আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন আফগানের মধ্যে আপনি দেখতে পারেন। সেখানে শরিয়া অনেক বেশি পালন করা হচ্ছে।’ আবার পাল্টা প্রশ্ন করেন খালেদ মুহিউদ্দীন ‘আপনি আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশ বানাতে চান?’ জবাবে ফয়জুল করীম বলেন, ‘হ্যাঁ, বানাতে চাই।’

বাংলাদেশে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে?

আজকের কুটুক্তিমূলক মন্তব্যগুলি ছোট বলে উড়িয়ে দিলে ভুল হবে। এ ধরনের মনোভাবই একসময় নারীর স্বাধীনতা, চলাচল, মতপ্রকাশ—সবকিছুকে সংকুচিত করে বড় সামাজিক সমস্যার জন্ম দেবে। এবং সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে নারীর মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক ধারণার বিস্তার। নারীরা শুধু পুষের দ্বারা কুটুক্তি বা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না, হচ্ছে স্বয়ং অন্য একজন নারীর দ্বারাও। এই যে নিজেকে শরীর সর্বস্ব করে তোলার নারীর মানসিকাতা তা যেন জেনেটিক্যালি কোডেড হয়ে গেছে। এমন নয় যে রাস্তায় কেউ বোরকা ছাড়া বের হতে পারছেনা, বের হলেই মৌলবাদী কেউ আক্রমণ করছে। কিন্তু সুপরিকল্পিত ভাবে নারীর মস্তিষ্কে পর্দাকে নরমালাইজ করা হয়েছে। এছাড়া বেশির ভাগ নারীর মধ্যে এক ধরণের আতংক কাজ করে, কূটুক্তির আতংক, লাঞ্ছিত হবার আতংক, শারীরিক আক্রমণের আতংক কিংবা সমাজের ভালো মেয়ে তকমা থেকে বঞ্চিত হবার আতংক। এই সমাজে ভালো মেয়ের সংজ্ঞায়ন হয় তার পোশাকে। 

সমাজের নারী পুরুষ উভয়েরই এই যে মানসিক পরিবর্তন তা অতন্ত্য আশঙ্কাজনক। কেন মনে হয় ধীরে ধীরে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের দিকে হাটছে? ৬০ এর দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভবত সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের একটি ছবি ফেসবুকে দেখা যায়, একদল নারী কেউ শাড়ি কেউ কামিজ কেউ বা স্লিভলেস ব্লাউজ পরা। এমন আরো অনেক ছবিই দেখা যায় যার কোনটিতেই বোরকা বা হিজাব নেই। এই যে ধীরে ধীরে পোশাকের পরিবর্তন তা শুধু পোশাক নয় বরং মানসিকতার পরিবর্তনেরই উদাহরন।

দুর্যোগের মুহূর্তে নারীর ওড়না খোঁজার এই মানসিকতা দেখিয়ে দেয়— সমাজ এখনও নারীর দেহ, পোশাক সর্বোপরি স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। অথচ দুর্যোগে মানুষের একমাত্র পরিচয়—সে একজন মানুষ, যার জীবন রক্ষা জরুরি। সমাজের এই পশ্চাৎপদ মানসিকতাই একদিন আমদের আফফানিস্তানে রুপান্তরিত করবে। প্রথমে পোশাক, তারপর কর্মঘন্টা, তারপর গৃহবাসী।

 আফগানিস্তানে নারী ডাক্তারের অভাব কারণ বর্তমানে নারীরা ষষ্ঠ শ্রেনীর বেশি পড়াশোনা করতে পারেনা। অথচ একসময় আফগানিস্তানেও নারীরা ডাক্তার হতো, লেখক হত। ভালো কিংবা খারাপ কোন পরিবর্তনই রাতারাতি হয়না। ধীরে ধীরে সমাজের গভীরে প্রবেশ করাতে হয়। তাই এই ছোট ছোট উদাহরণগুলো আজ গুরুত্ব দিয়ে না দেখা হলে এগুলোই হতে পারে বাংলাদেশের আফগানিস্তান হওয়ার সূচনা। আফগানিস্তানের নারীদের যে দুঃখ আমরা দূর থেকে দেখেছি, তার বীজ কিন্তু এখানেই—এই কুটুক্তি, এই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই লুকায়িত।

তাই প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। নারীর পোশাক নয়, তার নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও মর্যাদা যেন সমাজের আলোচ্য বিষয় হয়। উদ্ধারকাজ, আশ্রয়কেন্দ্র, স্যানিটেশন— দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যেন থাকে লিঙ্গ-সংবেদনশীলতা। 

ভূমিকম্প পৃথিবীর পৃষ্ঠে ফাটল সৃষ্টি করলেও, আমাদের সমাজে যে ফাটল তৈরি হয়েছে—তা আরও গভীর। নারীর স্বাধীনতা নিয়ে ব্যঙ্গ, শাসন ও কণ্ঠনিরোধ আমাদের সভ্যতার মানদণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দুর্যোগের সময় মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে না পারলে, কোনো উন্নয়ন, আধুনিকতা বা শিক্ষা সমাজকে বদলাতে পারবে না। আফগানিস্তানের নারীদের পরিনতি আমাদের মনে রাখা উচিৎ নিজের নামের মতো।

 

লেখক:

সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী

 

  • লেখায় প্রকাশিত মতামত লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব। লেখাটি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভে সম্পাদকীয় অবস্থানের প্রতিফলন ঘটায় না।

 

Link copied!