ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখলে বোঝা যায়, এদেশে যখনই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তখনই দেশের উন্নয়ন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পল্লবীতে এক কর্মসূচিতে এ কথা বলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। এ সময় আওয়ামী যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
উক্ত কর্মসূচিতে যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে ছিল, দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা। সেই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রীসভার বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে তিনি গত পরশু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়েছেন, তাদের তাগাদা দিচ্ছেন এবং তাদের কাজের তদারকি করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের সমস্যা সমাধান করে আপনাদের জীবনমান উন্নত করা। সেই লক্ষেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে; আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার উপর আস্থা রাখতে হবে। অচিরেই আমরা এই সংকট সমাধান করব।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে বিএনপির সময় কি দুরাবস্থা ছিল আমাদের সামগ্রিক জীবনে। মানুষের ভাত এবং কাপড়ের সমস্যাতেই সাধারণ মানুষ জর্জরিত থাকত। গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং সারের জন্য মানুষের উপর গুলি চালানো হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে। চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি লেগেই ছিল। মানুষের জীবনে কোন নিরাপত্তা ছিল না, ছিল না মানুষের অধিকার। গরিব-দুঃখী মানুষ নিয়ে তাদের কোনদিনই কোন মাথা ব্যথা ছিল না।
বিএনপিকে অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দল আখ্যায়িত করে শেখ পরশ বলেন, তারেক এবং খালেদা জিয়ার নির্দেশেই যে অগ্নিসন্ত্রাস চালানো হয় তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের মাধ্যমে এবং তাদের ধৃত নেতা-কর্মীদের স্বীকারোক্তি থেকে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনাকালে অগ্নিদগ্ধ ও আপনজন হারা স্বজনদের ব্যথা এখনো মানুষের মনে দাউ দাউ করে জ্বলে। বিএনপি জানে, তাদের জন্য মানুষের শুধু মাত্র ঘৃণাই রয়েছে; মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। তাই তারা নির্বাচনে যেতে ভয় পেয়েছে, কারণ তারা জানে যে এই অপরাধী বিএনপিকে মানুষে কোনদিনও ভোট দেবে না। সে অপরাধবোধ থেকে মানুষের সামনে ভোট চাইতে যেতে ভয় পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান আরও বলেন, যখনই এদেশের মানুষের জীবনে উন্নতি হয়েছে অথবা আরও অধিকতর উন্নতির সুযোগ রয়েছে, তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে, সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিএনপি-জামায়াত। আজকেরও তাদের এই কালো পতাকা মিছিল তাদের কু-মতলবের আভাস বহন করে এবং একটা অশনি সংকেতের ইঙ্গিত বহন করে। আবারও কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পায়তারা করছে কিনা সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
শেখ পরশ বলেন, ঠিক যখন আওয়ামী লীগ সরকার দারিদ্র দূর করে এদেশের মানুষের মুখে দুবেলা ভাতের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করছে, ভূমিহীনদের বিনামূল্যে জমি, ঘর ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, ঠিক তখন বিএনপি-জামাত এই সকল অশুভ পায়তারা শুরু করেছে। যখন আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে, ঠিক তখন ওরা আবার জনবিরোধী কার্যকলাপ করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য রাষ্ট্রের মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এবং গণমানুষের সুখে-দুঃখে সাথী থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতিমধ্যে বেশ কিছু মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে যার একটি সামান্য প্রয়াস আজকের এই শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আজকের এই মানবিক কর্মসূচি থেকে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই যুবসমাজ, ছাত্রসমাজের প্রতি যে আপনারা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গত ৭ জানয়ারি ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ৫ম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ আপনারা জঙ্গি-সন্ত্রাসী বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে সমর্থন দেন নাই এবং তাদেরকে প্রত্যাখান করে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী। আমাদের কাজ একটাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে জনগণের কল্যাণে কাজ করা, সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজউদ্দিন আহমেদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. গোলাম কিবরিয়া শামীমসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।