ছবি: সংগৃহীত
আজ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অভিষেক হচ্ছে ফাহামিদুল ইসলামের। ইতালি প্রবাসী এই ফুটবলারকে ভুটানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের একাদশে রেখেছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। একাদশে আছেন হামজা চৌধুরীও। গত মার্চে জাতীয় দলে অভিষেক হলেও দেশের মাটিতে এটি তার প্রথম ম্যাচ।
অবশ্য আলোচিত অন্য প্রবাসী ফুটবলার শমিত সোম একাদশে নেই। ভুটানের বিপক্ষে কাবরেরার একাদশে আছেন মিতুল মারমা, সাদ উদ্দিন, তপু বর্মণ, তাজ উদ্দিন, তারিক কাজী, সোহেল রানা, হামজা চৌধুরী, ফাহামিদুল ইসলাম, জামাল ভূঁইয়া, কাজেম শাহ ও রাকিব হোসেন।
মার্চে ভারতের বিপক্ষে খেলা একাদশ থেকে পরিবর্তন এসেছে মোট ৫টি। বাদ পড়েছেন শাকিল তপু, জনি, হৃদয়, মোরছালিন ও শাহরিয়ার ইমন। হামজা, ও ফাহমিদুল ছাড়া একাদশে এসেছেন তাজ উদ্দিন, কাজেম শাহ ও জামাল ভূঁইয়া। তাজ উদ্দিন হলেন সাদ উদ্দিনের ভাই। অর্থাৎ দুই সহোদরকে দেখা যাবে বাংলাদেশের রক্ষণে।
ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে নতুন এক আবহে। দীর্ঘ সংস্কারের পর নতুন সাজে সেজেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। নতুন ঘাস, নতুন আসন, উজ্জ্বল ফ্লাডলাইটের আলোয় যেন জেগে উঠেছে এক স্বপ্নের মঞ্চ। নতুন দিনে, নতুন প্রত্যয়ের গল্প শুরু হলো আজ ভুটানের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ দিয়ে। সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু। আর এই মাঠেই ১০ জুন হবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের লড়াই।
মাঠের বাইরে কিছুটা হলেও লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। গেটের সামনে লাইন, চোখে মুখে উৎসুক আলো। অনেকেই এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। কেউ কলেজ শেষ করেই ছুটে এসেছেন। নারায়ণগঞ্জের তরুণ সামিউল আবেগাপ্লুত গলায় বললেন, হামজার খেলা দেখতে এসেছি ভাই! ফাহামিদুলের দিকেও চোখ থাকবে। আশা করি আজ ২-৩ গোলে জিতব!
মিরপুরের শাখাওয়াত আলীর কণ্ঠে সেই পুরোনো দিনের উত্তেজনা, এই দিনটার জন্যই তো অপেক্ষা করছিলাম। মনে হচ্ছে, ফুটবল আবার বাঁচছে!
প্রেসবক্সে ফিরেছেন সাংবাদিকেরা। দীর্ঘদিন পর নিজের জায়গায় ফিরে যেন স্বস্তির নিশ্বাস। আগের ধূসর ও জরাজীর্ণ পরিবেশ এখন অতীত। আধুনিক চেয়ার, ঝকঝকে ডেস্ক, আলো-বাতাসে ভরপুর এক নতুন কর্মপরিবেশ। তবে লম্বা প্রেসবক্সের সামনে কয়েকটি স্তম্ভ থাকায় কিছু অংশে দৃষ্টির বাধা—একটু ঘাড় ঘোরাতে হয়। কিন্তু এই সামান্য অসুবিধা তুচ্ছ, কারণ পুরো স্টেডিয়ামটাই যেন এক স্বপ্নের রূপ নিয়েছে।
লাল-সবুজের পাশে ধূসর রঙের নতুন চেয়ার। এই প্রথম কোনো ফুটবল স্টেডিয়ামে গ্যালারির ওপর ছাদ। ঝলমলে এলইডি ফ্লাডলাইট, আধুনিক ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড, মাঠের পাশে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য ডিসপ্লে। তাজা ঘাসের মাঠ। সব মিলিয়ে যেন বাংলাদেশ ফুটবলের ঘরে ফেরার এক মহাকাব্যিক আয়োজন।
ম্যাচের আগেই স্লোগানে ফেটে পড়ল গ্যালারি। হামজা চৌধুরী যখন ওয়ার্মআপে মাঠে নামলেন, তখনই গর্জে উঠল দর্শক: ‘হামজা! হামজা! কেউ নিয়ে এসেছে প্ল্যাকার্ড: ‘আমরা বিশ্বাস করি তুমি জিতবে।’
ফুটবলের এই ফিরে আসা শুধু এক সন্ধ্যার ম্যাচ নয়, এ যেন এক নবজাগরণের ধ্বনি।