অক্টোবর ১২, ২০২২, ০২:২১ পিএম
স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা মামলায় ক্রিকেটার আল আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার (১২ অক্টোবর) এ পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন।
এ দিকে, আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেছেন আল আমিন। অন্যদিকে আল আমিনকে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারির আবেদন করেন ইসরাত জাহান। শুনানি শেষে পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গত ৬ অক্টোবর আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সাত পাতার লিখিত জবাব দাখিল করেন আল আমিন। যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, গত ২৫ আগস্ট বৈবাহিক সম্পর্কের তিক্ততা বৃদ্ধি এবং অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। তবে বাদী ইসরাত জাহান বলেন, তালাকের কোনো কিছুই পাইনি। আমি ন্যায়বিচার চাই। গত ২৭ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ৬ অক্টোবর পর্যন্ত আল আমিনের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। ওই দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন আল আমিন।
উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর তার মায়ের মাধ্যমে স্ত্রী ইসরাতের সাথে আর সংসার না করার ও সন্তানদের ভরণপোষণ না দেয়ার কথা জানান আল-আমিন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে বাসা থেকে বের করে দেয়ার ও তালাকের কথাও জানান তিনি। তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি একজন নারীর সাথে ওঠানো ছবি স্ত্রী ইসরাতের কাছে পাঠিয়েছেন।
এ অবস্থায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর আল-আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইসরাত জাহান। এই মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে ২৭ সেপ্টেম্বর জামিন পান আল-আমিন। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিয়ে হয় আল-আমিন ও ইসরাতের। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে আল-আমিন স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণ দেন না এবং খোঁজখবর না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন। গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল-আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে তার সাথে সংসার করবে না বলে জানান। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর ধরে তিনি স্ত্রীর খোঁজখবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণ-পোষণের দাবি করে মামলাটি করেন। জীবনধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়াবাবদ মাসে ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
স্ত্রী ইসরাত জাহান পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ তুলে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা ভরণপোষণ দাবি করেন তিনি। ২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।