আগস্ট ৬, ২০২১, ০৭:১০ এএম
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। এমন বিশেষজ্ঞরা বহু আগে থেকেই এই সতর্কবাণী দিয়ে আসছে। আগস্ট মাসেই তার প্রতিফলন নজরে পড়তে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৭২ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরী সংক্রমিত হয়েছে করোনাভাইরাসে।দেশটির চলমান মহামারির ইতিহাসে এত বেশি সংখ্যক শিশু সংক্রমণ চোখে পড়েনি এর আগে।
জুন মাসের তুলনায় সংক্রমণের সংখ্যা পাঁচ গুণ বেড়েছে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেল্থ’-এর ডিরেক্টর ফ্রান্সিস কলিনস বলেন, ‘‘একটা বিষয় স্পষ্ট। এখন করোনার যে ভেরিয়েন্টটি ছড়াচ্ছে, সেটি বাচ্চাদের গুরুতর ভাবে কাবু করতে সক্ষম।’’ কলিনস জানান, লুইজ়িয়ানার হাসপাতালের শিশু বিভাগ থেকে খবর মিলেছে, কয়েক মাসের শিশুও সংক্রমিত হয়েছে। কলিনসের কথায়, ‘‘অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে, তোমার বয়স কম, চিন্তা নেই। কিন্তু তেমনটা নয়। চিন্তা থাকছেই।’’
এ ক্ষেত্রে কী করণীয়? বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বাবা-মায়েদের উচিত টিকাকরণ নিয়ে আর একটু গুরুত্ব দিয়ে ভাবা। কোনও শিশুর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির (মা-বাবা বা অন্য কেউ) যদি টিকাকরণ না-হয়ে থাকে, তা হলে দ্রুত টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, অতিমারি সম্পর্কে ছোটদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলা। যাতে তারা করোনা-বিধি যতটা সম্ভব মেনে চলে। বাচ্চার যদি টিকা নেওয়ার সুযোগ থাকে (আমেরিকায় ১২ বছরের ঊর্ধ্বে টিকাকরণ চলছে), সে ক্ষেত্রে তাকে টিকা দেওয়া ও টিকার উপযোগিতা সম্পর্কে বোঝানো। বাচ্চার সংস্পর্শে আসা সকলে যাতে মাস্ক পরেন ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে বাবা-মাকে।
স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের শিশু বিভাগের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ইভোন মালডোনাডো বলেন, ‘‘আপনার বাচ্চা যে গাড়িতে বসে, তার চালক যদি সিট-বেল্ট না পরেন, কিংবা তাঁর যদি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স না-থাকে, আপনি কি বাচ্চাকে ওই গাড়িতে যেতে অনুমতি দেবেন! নিশ্চয়ই নয়। বিষয়টা তেমনই।’’ ওহায়োর একটি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডেন স্নাইডারের কথায়, ‘‘করোনা-বিধির প্রতিটি খুঁটিনাটি ছোটদের পক্ষে মেনে চলা হয়তো কঠিন। এ অবস্থায় পরিচ্ছন্নতার উপরে জোর দেওয়া জরুরি। হাত পরিষ্কার থাকলে, সে অনেকটাই বিপন্মুক্ত। তাই বারবার হাত ধোয়া উচিত।’’ এ ছাড়া ছোটদেরও মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার মতো কোভিড বিধি মেনে চলা প্রয়োজন।
‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’-এর ঘোষণা, বয়স ২ বছরের ঊর্ধ্বে হলেই মাস্ক পরতে হবে। টিকা নেওয়া হয়ে গেলেও মাস্ক আবশ্যিক। বিশেষ করে যখন বাচ্চা স্কুলে যাচ্ছে। ওয়াশিংটনের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সারা কোম্বের কথায়, ‘‘বাচ্চাকে বোঝান, সুপারম্যানও তো মাস্ক পরে। ওই রকম বা অন্য কোনও প্রিয় কার্টুন চরিত্রের মতো মাস্ক কিনে দিন। মাস্ক জরুরি।’’
সূত্র: আনন্দবাজার।