বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের আসল কোম্পানি ফেসবুক ইনকরপোরেশন নাম পরিবর্তন করে মেটা রাখা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার(২৮ অক্টোবর) ভার্চুয়ালি আয়োজিত অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) কনফারেন্সে নতুন এই নাম ঘোষণা করেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ।
তিনি বলেন, এখন থেকে ‘মেটা’ নামে ব্যবসায়িক সব কার্যক্রম পরিচালনা করবে কোম্পানিটি। তবে এ ক্ষেত্রে করপোরেট কাঠামোর কোনো পরিবর্তন হবে না বলেও জানান তিনি।
‘মেটা’র আওতায় নতুন বিভিন্ন অ্যাপস ও প্রযুক্তি পণ্য বাজারে আনার ঘোষণা দিয়ে মার্ক জুকারবার্গ আরও বলেন, “সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুর সাথে লড়াই করে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এবার আমাদের শেখা সবকিছু দিয়ে পরের অধ্যায়ে যাওয়ার সময় এসেছে।”
শুধুমাত্র নাম বদলই পরিবর্তনই নয়। জুকারবার্গের সংস্থায় আরও ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের বিষয়েও জানানো হয়েছে।
এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেস (এএফপি), বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, মূল প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হলেও ফেসবুক অ্যাপের নাম বদলাচ্ছে না। নতুন যে নামে সংস্থাটি আত্মপ্রকাশ করছে তার অধীনে একটি অ্যাপের নাম হয়ে থাকবে ফেসবুক।
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পথচলা শুরু করা ফেসবুকের রয়েছে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, অকুলাসের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আরো বেশ কিছু অ্যাপ। নতুন নামে ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে ফেসবুক ইনকরপোরেশনের এ অ্যাপগুলো একটি মূল কোম্পানির অধীনে চলে আসবে।
কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, ফেসবুক ইনকরপোরেশনের আওতায় বর্তমানে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের মতো একাধিক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তাই মূল প্রতিষ্ঠানের নাম ফেসবুক হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। এ জন্য মূল প্রতিষ্ঠানের নামটি পরিবর্তন করা হয়েছে। অনেকটা গুগলের মতো। মূল সংস্থার নাম হিসেবে রয়েছে গুগল আলফাবেট, সেভাবেই নাম বদলাল ফেসবুক।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান সরকারি তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছে ফেসবুক। ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে এই প্রযুক্তি জায়ান্ট। এমন সময় ফেসবুকের নতুন নামটি ঘোষণা করা হলো ।
তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ফেসবুক মেটাভার্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হবে অনেক বেশি উপভোগ্য। অন্য মাত্রায় পৌঁছবে গেমিং বা আলোচনা থেকে অনলাইন কেনাকাটার অভিজ্ঞতা।
মেটাভার্সকে ‘ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ’ আখ্যা দিয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মেটাভার্সের যুগে ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগত ক্রমেই বাস্তব হয়ে উঠবে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২৯০ কোটি মাসিক গ্রাহক রয়েছে ফেসবুকের। তবে নাম পরিবর্তনের পর ফেসবুকের চারিত্রিক কোনও পরিবর্তন হবে কিনা তা এখনও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেনি