সম্পর্কটা দুই দেশের সাথেই ভাল চীনের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৩, ২০২২, ০৪:২১ এএম

সম্পর্কটা দুই দেশের সাথেই ভাল চীনের

রাশিয়ার সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং সেই সম্পর্ক রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকেও বেশ গভীর। চীন ও রাশিয়া উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নেটোতে নিতে আগ্রহী। আর ইউক্রেনের সঙ্গে তো রাশিয়ার যুদ্ধই চলছে। এই ইউক্রেনের সঙ্গেও চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য।

 

ঠিক এরকমই এক কঠিন ধাঁধায় পড়েছে চীন। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিষয়ে চীনের অবস্থান কী হবে সেটা বেইজিং-এর জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক এবং সর্বোপরি অর্থনৈতিক।

চীন সরকার ইউরোপে আরো একটি যুদ্ধ দেখতে চায় না। কিন্তু একই সাথে তারা রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক আরো জোরালো করতে আগ্রহী।

মনে রাখতে হবে ইউক্রেনের এক নম্বর বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। তাদের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মতো অবকাঠামো প্রকল্পের রেলওয়ে এবং বন্দর নির্মাণে বেইজিং ও কিয়েভ একসাথে কাজ করছে। এই দুটো দেশের সামরিক সম্পর্কও গভীর। যুদ্ধ জাহাজের গ্যাস টার্বাইন, বিমানের ইঞ্জিন, এমনকি চীনের প্রথম বিমানবাহী জাহাজ লিয়াওনিং কেনা হয়েছিল ইউক্রেনের কাছ থেকে।

এসব কারণে বেইজিং কিয়েভের সাথেও ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। কিন্তু এই চীনেরই ঘনিষ্ঠ রাশিয়া যখন ইউক্রেনে বিধ্বংসী সব হামলা চালাচ্ছে, তখন কিয়েভের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক উষ্ণ রাখা তো অবশ্যই কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে বলেছেন, চীন পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতাকে জোরালোভাবে স্বীকৃতি দেয় ও সমর্থন করে এবং ইউক্রেনও সেসব দেশের একটি।

এই বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব চায়নার অধ্যাপক ও সমর বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেন, "ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি চীনের সমর্থন সুদৃঢ়। চীন মনে করে একটি দেশের নিরাপত্তা অন্য কোনো দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে সুনিশ্চিত করা যায় না। কাজেই যেসব দেশের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে সেগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করতে হবে।"

ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখেরও বেশি রুশ সৈন্য মোতায়েন শুরু হওয়ার সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চীনকে অনুরোধ করেছিলেন তারা যেন রাশিয়াকে ইউক্রেনের সামরিক অভিযান না চালানোর পরামর্শ দেন।

চীনা কর্মকর্তারা সেসময় এব্যাপারে ইতিবাচক কোনো সাড়া দেননি। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং টেলিফোন করে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সঙ্কট সমাধান করা সম্ভব বলে চীন মনে করে।

জবাবে প্রেসিডেন্ট পুতিন চীনা প্রেসিডেন্টকে বলেন যে রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। এর জের ধরেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বেলারুস সীমান্তে শান্তি আলোচনা শুরু হয়।

Link copied!