আগস্ট ৯, ২০২২, ০২:৫৮ এএম
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ট্রানজিট চুক্তির আওতায় দেশটির উত্তর-পূবাঞ্চলীয় রাজ্যে যেতে এবার ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে দুটি কন্টেইনার নিয়ে ‘এমভি রিশাদ রায়হান’ নামের নৌযানটি (লাইটারেজ জাহাজ) সোমবার সকাল ৯টার দিকে মোংলা বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে ভিড়ে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বিষয়টি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে নিশ্চিত করে এ ঘটনাকে বন্দরের জন্য ‘মাইলফলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।
ভারতের উত্তর-পূবাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের সই হওয়া ট্রানজিট চুক্তির আওতায় ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজের প্রথম চালান এসেছিল চট্টগ্রাম বন্দরে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে প্রথমবারের মতো ট্রায়াল রান হয়েছিল। ওইসময় কলকাতা বন্দর থেকে পণ্যবাহী নৌযান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আঘাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য গিয়েছিল ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে।
দুই বছর পর এবার মোংলা বন্দর ও সড়ক পথ ব্যবহারের ট্রায়াল রান হিসেবে ‘সেভেন সিস্টার্সের’ দুটি রাজ্যের জন্য পণ্য এলো।
মোংলা বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দুটি কন্টেইনারের মধ্যে একটি কন্টেইনার মোংলা-তামাবিল (সিলেট) সড়কপথ ব্যবহার করে যাবে মেঘালয় রাজ্যে। অপরটি মোংলা-বিবিরবাজার (কুমিল্লা) সড়কপথ দিয়ে আসামে যাবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফকর উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, দুইটি কন্টেইনারের মধ্যে একটিতে রয়েছে ৭০ প্যাকেজের ১৬.৩৮০ মেট্টিক টন লোহার পাইপ এবং আরেকটিতে রয়েছে ২৪৯ প্যাকেজে ৮.৫ মেট্টিক টন প্রিফোম। লোহার পাইপ যাবে মেঘালয়ে আর প্রিফোম যাবে আসামে।
চলতি বছরের ১ আগস্ট কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে ছেড়ে আসা এই জাহাজটির পণ্য মোংলা বন্দর জেটিতে খালাসের সময় অন্যদের মধ্যে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার ইনডার জিত সাগর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, মোংলাবন্দর দিয়ে ভারতীয় পন্যের ট্রানজিট হওয়ার ঘটনাকে বন্দরের জন্য ‘মাইলফলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।
সোমবার সন্ধ্যায় দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে তিনি বলেন, “মোংলা বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে হলে আমি বিশ্বাস করি।”
পন্য খালাসের সময় ভারতের সহকারী হাইকমিশনার ইনডার জিত সাগর গণমাধ্যমকে বলেন, “ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে অভ্যন্তরীণ নৌ-পথ ব্যবহার করে ব্যবসায়িক গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
২০২২ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ১৩তম ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট গ্রুপ অফ কাস্টমস (জেএসসি) বৈঠকের পর ট্রায়াল রান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারই প্রথম ট্রায়ালের পণ্য মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস ও পরিবহণ শুরু হয়েছে বলে জানান এই সহকারী হাইকমিশনার।