ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দুর্বৃত্তরা রংপুরের পীরগঞ্জের একটি গ্রামে ২০ টির বেশি হিন্দুদের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো: কামরুজ্জামান বলেন, ওই গ্রামের জেলেপাড়ার এক হিন্দু যুবক ফেসবুক পোস্টে ‘ধর্মকে অসম্মান করেছে’ বলে অভিযোগ পাওয়ার পর রবিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে সহিংসতার আশঙ্কায় রাতেই পুলিশ মাঝিপাড়ার জেলেপাড়ায় পৌঁছায়।
পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান আরও জানান,‘পুলিশ অভিযুক্ত ওই যুবকের বাড়ির চারপাশে পাহারায় থাকায় সেই বাড়িটি রক্ষা পেলেও হামলাকারীরা আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে’।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের করা রিপোর্টে জানা যায়, পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ার ২৯ টি বাড়ি, দুটি রান্নাঘর, দুটি ধানের গোলা এবং মোট ১৫ জন ভিন্ন মালিকের ২০ টি খড়ের গাদা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে অগ্নিকান্ডের কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে ‘উত্তজিত জনতার’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, রাত ৮ টা ৪৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। অবশেষে ভোর ৪ টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয় তারা।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সামাজিকমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওগুলিতে দেখা যায়, পীরগঞ্জ গ্রামের বাড়িঘর জ্বলছে এবং হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার একটি দুর্গাপূজামণ্ডপে কোরআন ‘অবমাননা;র অভিযোগকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুরসহ দেশের অনেক জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে হামলার উস্কানি এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে কয়েক ডজন মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ২৩ জেলায় বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দুধর্মের শারদীয় দুর্গোৎসব।
এর আগে বুধবার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পূজা মণ্ডপে হামলার সময় পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে চারজন নিহত হওয়ার কথা জানা গেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করেছে, চাঁদপুর ও নোয়াখালীতে হামলায় কমপক্ষে চারজন হিন্দু ভক্ত মারা গেছে।