প্যান্ডোরা পেপার্স: তালিকায় বাংলাদেশের আরও আটজনের নাম

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ০১:০৩ পিএম

প্যান্ডোরা পেপার্স: তালিকায় বাংলাদেশের আরও আটজনের নাম

অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বিদেশে পাচার এবং কর ফাঁকির গোপন জগৎ নিয়ে তৈরি করা প্যান্ডোরা পেপার্সের নথিপত্র প্রকাশ করেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)।

বাংলাদেশ সময় সোমবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এগুলো প্রকাশ করা হয়।আইসিআইজে এর নতুন তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আটজনের নামসহ বিশ্বের  সাত লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশিদের কেউ কেউ দেশের নামের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও আর্জেন্টিনার দেশের পরিচয়ও ব্যবহার করেছেন।

দ্বিতীয় ধাপের প্যান্ডোরা পেপার্সে যেসব বাংলাদেশির নাম এসেছে, তারা হলেন-নিহাদ কবির, ইসলাম মঞ্জুরুল, সাইদুল হুদা চৌধুরী, অনিতা রানী ভৌমিক, সাকিনা মিরালী, মোহাম্মদ ভাই, ওয়াল্টার প্রহদ্মাদ ও ড্যানিয়েল আর্নেস্তো আইউবাত্তি।

তবে তালিকায় স্থান পাওয়া ব্যক্তিরা কেউ বেআইনি কাজে জড়িত, তা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। প্যান্ডোরা পেপার্সে নথি ফাঁসকারী সাংবাদিকরাও এ কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

নথিপত্রে নিহাদ কবির বাংলাদেশে তার ঠিকানা দেখিয়েছেন রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোডের একটি বাড়ি। তার সম্পর্কিত তথ্য  বিশ্লেষণে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট।
নথিপত্রে বলা হয়, নিহাদ কবির ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে একটি কোম্পানি করেছেন; নাম ক্যাপিটাল ফেয়ার হোল্ডিং লিমিটেড। এর মালিক হিসেবে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৮ সালের ৮ আগস্ট কোম্পানিটির নিবন্ধন করা হয়।

প্যান্ডোরা  পেপার্সে নাম আসা আরেক বাংলাদেশি হলেন ইসলাম মঞ্জুরুল। নিহাদ কবিরের মতো তিনিও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে ওরিয়েন্টাল এগ্রিকেমিক্যাল কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেছেন। ইসলাম মঞ্জুরুল বাংলাদেশের গুলশানের একটি ঠিকানার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের পরিচয় ব্যবহার করেছেন।
নাম আসা অন্যদের মধ্যে সাইদুল হুদা, সাকিনা ও মোহাম্মদ ভাই গুলশানের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। অনিতা রানী ঠিকানা দিয়েছেন রাজধানীর চকবাজারের।
সাইদুলের কোম্পানির নাম বেবেন ইন্টারন্যাশনাল, অনিতার কোম্পানি আনটেরিস হোল্ডিংস লিমিটেড, সাকিনার মুন রেকার সার্ভিসেস করপোরেশন, মোহাম্মদ ভাইয়ের ১৯৩৬ হোল্ডিংস লিমিটেড, প্রহদ্মাদের স্লিন্ট লিঙ্ক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এবং ড্যানিয়েলের কুডেল লিমিটেড।

তাদের সব সব কোম্পানিই  ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত। প্যান্ডোরা পেপার্স এর আগে প্রথম ধাপে প্রকাশিত নথিতে নেপালের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর নাম প্রকাশ করেছিল।

প্রসঙ্গত, প্যান্ডোরা  পেপার্স হচ্ছে আইসিআইজে প্রকাশিত প্রায় এক কোটি ২০ লাখ নথির ডকুমেন্ট। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনকুবের, রাজনীতিবিদ ও ক্ষমতাবান ব্যক্তির অর্থ পাচার, কর ফাঁকি ও গুপ্ত সম্পদের তথ্য সামনে এসেছে।

আর আইসিআইজে হচ্ছে ৭০টির বেশি দেশে ২০০ জনেরও বেশি অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং ১০০টি মিডিয়া সংস্থার ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।  সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টিগ্রিটি দ্বারা ১৯৯৭ সালে চালু হয়ে সংগঠনটি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন সংগঠনে পরিণত হয়। এই সংগঠনটি  সীমান্তের অপরাধ, দুর্নীতি এবং ক্ষমতার জবাবদিহির মতো ইস্যুতে কাজ করছে।

Link copied!