শরীয়তের হুকুম হিজাব খোলবানা ঝর্ণা: মামুনুল হক

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২৪, ২০২১, ০৭:৩৫ পিএম

শরীয়তের হুকুম হিজাব খোলবানা ঝর্ণা: মামুনুল হক

ধর্ষণ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণাকে হেজাব না খুলতে হুঙ্কার দিয়েছেন মামলার আসামি ও হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসানের আদালতে জান্নাত আরা ঝর্ণা ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনাসহ সাক্ষ্য দেন।

আদালতে সাক্ষী দেওয়ার সময় ঝর্ণাকে মুখের হিজাব খুলতে বলা হয়। এ সময় আসামীর কাঠগড়া থেকে মামুনুল হক ঝর্ণাকে হিজাব খুলতে নিষেধ করেন।  হুঙ্কার দিয়ে বলেন, “শরীয়তের হুকুম হিজাব খোলবানা ঝর্ণা।”

এতে ঝর্ণা একবার হিজাব খুলে বিচারককে মুখ দেখিয়ে ফের হিজাব দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন। জেরা চলাকালীন ঝর্ণার দিকে বারবার তাকিয়েছেন মামুনুল হক।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামুনুল হকের আইনজীবীরা ঝর্ণাকে জেরা করেন। নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, “মামুনুল হকের আইনজীবীরা ৪১ বার  বাদী ঝর্ণাকে বলেছেন আপনি মামুনুল হকের স্ত্রী। এর জবাবে ঝর্ণা বেগম প্রতিবারই না বলেছেন।” 

ঝর্ণা বেগম সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বলেছেন, “স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় মামুনুল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল। পরে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে মামুনুল তাকে নানা জায়গায় নিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেন।”

এছাড়া মামুনুল হক তাকে কোথায় কখন নিয়ে ধর্ষণ করেছেন তাও বলেছেন ঝর্ণা বেগম। ঝর্ণার জবানবন্দি শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবিরা তাকে জেরা করেছেন।

রকিবুদ্দিন আহমেদ অঅরও বলেন, “সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বাদীকে জেরা করেছেন। তার বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন জান্নাত আর ঝর্ণা তার (মামুনুল হক) স্ত্রী। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।”

অপরদিকে, আসামি মামুনুল হকের আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ গণমাধ্যমে বলেন, “বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা মেডিকেল টেস্টে বলেছেন তিনি মামুনুল হকের কালেমা পড়া স্ত্রী। মামুনুল হকের সঙ্গে তিনি ঢাকা থেকে এসেছেন। তাদের অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় তিনি কোথাও মামলা কিংবা জিডি করেননি। কারো কাছে বলেননি।”

আসামিপক্ষের এ আইনজীবী আরও বলেন, “ধর্ষণ একবার দুইবার হতে পারে। কিন্তু অসংখ্যবার হয় না। সেক্ষেত্রে আমি আশা করি আমরা সফলতা পাবো।”

প্রসঙ্গত, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাসহ অবরুদ্ধ হলে হেফাজতে ইসলাম’র স্থানীয় নেতাকর্মীরা ওই রিাসোর্টে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হেফাজতের নেতাকর্মীরা ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস, যুবলীগ ও  ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা চালায়। এক সাংবাদিককেও পিটিয়ে আহত করে তারা। এসব ঘটনায় মামুনুলের বিরুদ্ধে মোট ৬টি মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন রয়্যাল রিসোর্টে তার সঙ্গে অবরুদ্ধ হওয়া নারী জান্নাত আরা ঝর্ণা।ওই সময় মামুনুল হক ঝর্ণাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেছিলেন।

Link copied!