কোনো বিদেশী প্রভুদের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচন হবে না: শেখ পরশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০৯:১৩ পিএম

কোনো বিদেশী প্রভুদের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচন হবে না: শেখ পরশ

নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা অবাধ, নিরপেক্ষ এবং যথাযথ পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে; কোনো বিদেশী প্রভুদের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচন হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

বুধবার রাজধানীর  বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর ও ১১ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ‘পদযাত্রা’র নামে বিএনপি-জামাতের ‘সহিংস রাজনীতি’, জনগণ ও পুলিশের উপর হামলা, জানমালের ক্ষতিসহ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটানোর প্রতিবাদে আওয়ামী যুবলীগ  এই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

বিএনপি এখন লাশের রাজনীতি করতে চাচ্ছে-উল্লেখ করে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি বিভিন্ন অপচেষ্টা করবে। তারেক জিয়া চাচ্ছেন, বাংলাদেশে যাতে নির্বাচনটা না হয়। কারণ, তিনি মানি ল-ারিং মামলা ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা তাঁর বিরুদ্ধে চলছে। তিনি জানেন, সঠিক নির্বাচন হলে ১৫১ সিট তাঁরা পাবেন না। তাই তারা লাশের রাজনীতি করে নির্বাচন বানচাল করতে।”

যুবলীগ চেয়ারম্যান  বলেন, “আমি তাদের বলতে চাই, নির্বাচন হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই এবং নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা অবাধ, নিরপেক্ষ এবং যথাযথ পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। কোনো বিদেশী প্রভুদের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচন হবে না।“

বিএনপির পদযাত্রায় কোন জনসম্পৃক্ততা নাই দাবি করে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির এই বড় ছেলে আরও বলেন, “ কারণ জনগণের উপর তাদের অত্যাচারের কথা জনগণ ভুলে নাই। ২০১৪ সালের অগ্নিসংযোগের কথা জনগণ ভুলে নাই। সার ও বিদ্যুতের জন্য কৃষকদের উপর গুলির কথা জনগণ ভুলে নাই। এজন্য তারা হতাশায় ভুগেছে এবং সেই হতাশা থেকে তারা দিক বিদিক হারিয়ে ফেলেছে। তাদের সন্ত্রাসী চেহারা বের হয়ে আসছে। আসলে কিছু কিশোর গ্যাং এবং শিবিরের কর্মী দিয়ে তাদের মিছিল-মিটিং গরম করবে আর কত দিন? ”

শেখ পরশ বলেন, “বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি জনগণের কোন আস্থা নাই। কারণ তারা প্রতারক গোষ্ঠী, জনগণের ভোট পাইলে জনগণকে ভুলে যেতে তাদের দুই সেকেন্ডও লাগে না।”

যুবলীগ চেয়ারম্যান  বলেন, “আমি আহ্বান করতে চাই আপনাদের কাছে এবং একই সাথে বিএনপির নেতৃবৃন্দদেরকেও চ্যালেঞ্জ করতে চাই যে অনুগ্রহ করে ২০০১ সালে তাঁদের নির্বাচনী ইশতিহার বের করে দেখান কয়টা ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ করেছিলেন। তাহলেই প্রমাণিত হয়ে যাবে যে তারা প্রতারণার রাজনীতি করে, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের রাজনীতি করে।”

 তিনি বলেন, আমরা জনগণের পাশে থাকার কাজ অব্যাহত রাখব এবং জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রশ্নে যুবলীগ আপোসহীন, ভ্যানগার্ড হিসেবে আমরণ সজাগ এবং সরব দৃষ্টি রাখব এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করবো।”

যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, “বিএনপি-জামাত একটি জঙ্গি সংগঠন, একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সংগঠন দেশকে ভালবাসে না, দেশের মানুষকে ভালবাসে না। এই সংগঠন যখনই রাজপথে এসেছে তখনই মানুষের জানমালের উপর হামলা হয়েছে। বিএনপি যেকোন সময় মানুষের উপর হামলা করে জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে। তাদের অতীত ইতিহাস সে কথাই বলে।”

তিনি বলেন, “আমরা যুবলীগ আজ শপথ করে বলতে চাই প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে সেই অগ্রযাত্রা বিএনপি-জামাত রুখতে পারবে না। জীবন দিয়ে হলেও আমরা যুবলীগ রাজপথে থেকে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মোকাবিলা করবো।”

প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ।

অনুষ্ঠানে থেকে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাস, সহিংস রাজনীতি, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, জনগণ ও পুলিশের উপর হামলার প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান।

যুবলীগের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

 ১৭ ফেব্রুয়ারি:  বিকেল ৩টায়, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের প্রতিবাদ সমাবেশ। একই দিন  বিকেল  ৪টায়  রাজধানীর  ফার্মগেইট চত্বরে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা যুবলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ।  

১৮ ফেব্রুয়ারি: ঢাকা মহানগর ব্যতীত দেশের সকল বিভাগীয় শহরে প্রতিবাদ সভা।

১৯ ফেব্রুয়ারি: দেশের প্রতিটি উপজেলা/থানা ও পৌরসভায় প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল।

২০ ফেব্রুয়ারি: দেশের প্রতিটি জেলায় প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল।

২২ ফেব্রুয়ারি: ঢাকা মহানগরে জাতীয় সংসদের আসন ভিত্তিক এবং দেশের সকল মহানগরের প্রতিটি থানায় প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল।

Link copied!