বকশিশ কম দেওয়ায় ওয়ার্ডবয় খুলে নিল অক্সিজেন মাস্ক, রোগীর মৃত্যু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১১, ২০২১, ০১:০১ এএম

বকশিশ কম দেওয়ায় ওয়ার্ডবয় খুলে নিল অক্সিজেন মাস্ক, রোগীর মৃত্যু

মাত্র ৫০ টাকা বকশিশ কম দেওয়ায় রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দিয়েছে এক ওয়ার্ডবয়। মৃত্যু হয়েছে সেই রোগীর। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

ওয়ার্ডবয় আসাদুজ্জামান দুলু চাহিদা অনুযায়ী বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ায় বিকাশ চন্দ্র দাস নামের এক স্কুলছাত্রের (১৭) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

ঘটনার পর রোগীর স্বজনরা তাকে ধাওয়া দিলে দুলু পালিয়ে যায়।

বিকাশ চন্দ্র দাস গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মচারের ছেলে। স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো সে।

বিকাশের স্বজনরা জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতো বিকাশ। মঙ্গলবার (০৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে বাইসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। রাস্তায় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথায় গুরুতর আঘাত পায় সে।

প্রথমে বিকাশকে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাত ১০টার দিকে শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাজ শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্সিজেনসহ তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগে নেওয়া হয়। ট্রলি বহনকারী হাসপাতালের কর্মচারী আসাদুজ্জামান দুলু বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিশ দাবি করে। বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দিলে আরও ৫০ টাকার জন্য বাগবিতণ্ডা শুরু করে। এরপর অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে। তাকে মাস্ক লাগাতে অনুরোধ করলে অস্বীকৃতি জানায় দুলু। বাধ্য হয়ে নিজেরা মাস্ক লাগালোর চেষ্টা করেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। এ সময় নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশ মারা যায়। চিকিৎসক এসে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।  

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, এ ঘটনায় জরুরি বিভাগের একজন মেডিক্যাল অফিসারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। সত্যতা পেলে দুলুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, বকশিস কম দেওয়ায় হাসপাতালের খণ্ডকালীন কর্মচারী এই অপরাধ করেছে। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Link copied!