অক্টোবর ১৭, ২০২২, ১০:২৫ পিএম
বিয়ে বাড়িতে খাওয়ার পর্ব শেষে বরের হাত ধুইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বকশিস নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ত্রিশ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মুরাদনগর ও দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে বিয়ে সম্পন্ন না করেই কনের বাড়ি থেকে ফিরে গেছেন বরপক্ষ। এঘটনায় কনের ভাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
গতকাল রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল রবিবার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের মো. ইসমাইল মূন্সীর ছেলে মো. সাদেক হোসেনের (২৬) সঙ্গে মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের মো. শানু মিয়ার মেয়ে সোনিয়া আক্তারের (১৮) পারিবারিকভাবে বিয়ের দিন ধার্য ছিল। এদিন সকারৈ দুপুরের পর বরযাত্রী কনের বাড়িতে গেলে বিয়ের গেইটে সালামি নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বরযাত্রীদের খাবার কম দেওয়া এবং সবশেষে খাবারের পর বরের হাত ধুইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে সালামি নিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নিলে বরপক্ষের অন্তত ১৫-২০ জন ও কনে পক্ষের ৮-১০ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে সায়মা বেগম, কামাল হোসেন, ফয়েজ আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, বাবু, হেলালসহ কয়েক জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষের কারনে বিয়ে সম্পন্ন না করেই কনের বাড়ি থেকে বরযাত্রীরা ফিরে যান।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে কনের বড় ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন উল্লেখ করেন, বর পক্ষ ১৫০ জনের পরিবর্তে ১৬০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসেন। তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ করার পর বরের হাত ধোয়ার বকশিশ নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এসময় কনের পক্ষের মেয়েদেরকে বরপক্ষের লোকজন অকথ্যভাষায় গালমন্দ, মারধর ও শ্লীলতাহানী ঘটায়। এ অবস্থায় ওই বাড়ির লোকজন বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের লোকদের উপর হামলা চালায়। এসময় কনে সোনিয়া আক্তার, মো. সোহেল মিয়া, সানাউল্লাহ, মো. শিপন মিয়াসহ ৮-১০জন মারাত্মক আহত হয়। বরপক্ষের লোকজন কনের কক্ষে ঢুকে স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে গেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বরের ভাই মো.সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বরযাত্রী নিয়ে পৌঁছানোর পর বিয়ের গেইটে বখশিশের জন্য চাপ দেয়। আগে সিদ্ধান্ত হওয়া ১৫ হাজার টাকার পরও আরো ৫শত টাকা দিলে কনে পক্ষের লোকজন গেইটের চেয়ার-টেবিল ছুড়ে ফেলে দেয়। বরযাত্রী ১৩০ জনের পরিবর্তে ১০ জন কম গেলেও তারা বরপক্ষের লোকদের খাবার দিতে পারে নাই। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের পরিহিত জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে। আমাদের মহিলাদের উপরও হামলা চালায়। আমি থামাতে গেলে মারধরের আঘাতে অচেতন হয়ে পড়ি। এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, “বর পক্ষের লোকজনের কনে পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা, বিয়েতে বকশিস নিয়ে কথা কাটাকাটি ও এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া এবং সংঘর্ষে আহত হওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। কনের ভাই থানায় এসে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”