যেকোনো সময় সাড়ে আট থেকে নয় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে। ভূতাত্ত্বিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে এমন আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। আর এই ভূমিকম্পে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ হবে রাজধানী ঢাকায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর্থ ওবজারভেটরি। যেখানে গত ১৮ বছর ধরে ভূমিকম্পের গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন অধ্যাপক হুমায়ূন আখতার।
তার গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ইন্ডিয়ান-ইউরোশিয়ান এবং বার্মা এই তিনটি গতিশীল টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান বাংলাদেশের। তার বিশ্লেষণ অনুযায়ী দেশের দুদিকের ভূ-গঠনে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প ঘটানোর মতো শক্তি জমা হয়েছে। তার মতে, দেশ সীমানার কাছাকাছি শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ে পড়বে রাজধানী ঢাকা।
অধ্যাপক হুমায়ূন আখতার বলেন, ‘কম মাত্রার ভূমিকম্প ও একদম ভূমিকম্প না হওয়া আমাদের জন্য বিপদ সংকেত’।
এই ভূমিকম্পে ঢাকার অবস্থা ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘ভবন কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়নের সময় ভূমিকম্পের বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়না। এমনকি সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে সচেতনতার অভাব’।
হুমায়ূন আখতার আরও বলেন, বড় ধরণের ভূমিকম্পের মোকাবিলার কোন প্রস্তুতি আমাদের নেই।
কনক্রিটের জঞ্জারে পরিণত হওয়া ঢাকায় রাজউকের হিসেবে সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি বহুতল বিল্ডিং আছে। এসব ভবনের বেশির ভাগই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। সঙ্গে আছে তীব্র যানজট, ধুলোবালিতে অস্থির পরিবেশ। আছে হাজারো নাগরিক সংকট। তবুও সাড়ে ৪শ বর্গকিলোমিটারে এই নগরীই, আঁকড়ে ধরে আছে দু’কোটি প্রাণ। কিন্তু এই নগরীতে মানুষের চোখের অন্তরালেই বছরের পর বছর ধরে জমা হচ্ছে বিস্ফোরক শক্তি!