মার্চ ৮, ২০২৩, ১২:৩৯ এএম
‘সকালে কইলি (বললি) এক লগে নামাজ পড়বি, কইয়া দোকানে গেছিলো,আর অহন নামাজ পরমু তর জানাজার’- বলে বিলাপ কররেত থাকেন থাকেন গুলিস্থান বিস্ফোরণের নিহত সিয়ামের ( ১৯) বন্ধু রাতুল।
রাতুল বলেন, “ওয় ওই বিল্ডিংয়ে কাজ করত দোকানে।সকালে বন্ধু কইছে কাম থেইক্কা সন্ধ্যায় আইসা এক লগে শবে বরাতের নামাজ পড়মু বন্ধুরা সবাই।এরপর আর সারাদিন কথা হয় নাই ।বিকালে শুনি আমার বন্ধু আর নাই। খবর শুইনা আইছি ঢাকা মেডিকেল।”
নিহত সিয়ামরা দুই ভাই। তার পিতা দুলাল মিয়া ছোটখাট কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খায় বলে সিয়ামও সংসারে হাল ধরতে সেনেটারি দোকানে চাকরি নিয়েছিলো। সিয়াম তারে বাবা-মার সাথে কেরানিগন্জ কবুতর পাড়ায় ভাড়া বাসায় বাস করতো।
এদিকে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে ছেলেকে দেখার জন্য ছুটে আসেন সিয়ামের মা হালিমা বেগম। সন্তান হারানোর শঙ্কায় একটু পর পর মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।
সিয়ামের বাবা মো. দুলাল মিয়া বলেন, “আমার বড় ছেলের অবস্থা ভালো না। আজকে ও অফিস শেষ করে যাওয়ার পর বাসায় শবে বরাত উপলক্ষে আমারা একটু ভালো খাবারের আয়োজন করছিলাম। সিয়ামের রিজিকে তা ছিল না। আমরা ফোন পেয়ে সবাই হাসপাতালে চলে এসেছি। আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন।”
প্রসঙ্গত, গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের পাশে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সাততলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভবনের নিচতলায় স্যানিটারি দোকানেই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে উপরের কয়েকটি তলায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সন্ধ্যায়ও সেখানে উদ্ধার কাজ চালায় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। বহুতল ভবনে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৪০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভেতরের জিনিসপত্র ছিটকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে।