খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় ৩ মামলা, আসামি হাজারের বেশি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় ৩ মামলা, আসামি হাজারের বেশি

ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির গুইমারা ও সদর উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় হাজারের বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে গুইমারা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ দুইটি এবং খাগড়ছড়ির সদর থানায় অপর মামলাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

গুইমারা থানার ওসি মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকালে ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে ধান ক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এসব ঘটনায় হত্যার শিকারদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সদস্যরা মামলা না করায় বুধবার রাতে গুইমারা থানার এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

এর মধ্যে হত্যা মামলায় অজ্ঞাত ১০০ ব্যক্তিকে এবং সহিংসতা, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আড়াইশ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান ওসি এনামুল।

অপরদিকে ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা।

এসআই শাহীন বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে করা মামলায় অজ্ঞাত সাতশ থেকে আটশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় মারমা জাতিগোষ্ঠীর এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভ ও উত্তেজনা চলছিল পার্বত্য এ জেলায়।

যদিও পরবর্তী মেডিকেল পরীক্ষায় কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পায়নি তিন সদস্যের চিকিৎসক দল।

এদিকে ধর্ষণের অভিযোগের পরদিন সেনাবাহিনীর সহায়তায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু বাকিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’। 

অবরোধে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এমন উত্তেজনার মধ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারায় ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা হয়, সেখানে গুলিতে নিহত হন অন্তত তিনজন।

গুইমারায় সংঘটিত ঘটনার তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আট দফা দাবি পূরণের আশ্বাস ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিতের ঘোষণা করে জুম্ম ছাত্র-জনতা। অপরদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হলে ধাপে ধাপে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।

এরপর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে খাগড়াছড়ি।

Link copied!