মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি (এএ) ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তে। এপার থেকে দেখা যাচ্ছে আগুনের কুণ্ডলী।
শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়া পাড়ার স্থল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে এই শব্দ শোনা গেছে। সেখান থেকে আগুনের কুণ্ডলীও দেখা যাচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ পৌরসভার সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ কাদের বলেন, “রাতে সীমান্তের ওপারে আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে। এর আগের দিন বিকট শব্দ শোনা গেছে, আজও শোনা গেছে।”
তবে সীমান্তের গোলার বিকট শব্দ বন্ধ হয়নি জানিয়ে টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার বসবাসকারী আবুল আলী বলেন, “আজও (শুক্রবার) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সীমান্তের মানুষ গোলার বিকট শব্দ পেয়েছি।”
এদিকে সূত্র জানায়, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড সদস্যরা দিনরাত টহল বাড়িয়েছে। নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবসময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষীরা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা বলেছেন। আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।”
এদিকে আরকান আর্মি (এএ) মংড়ু টাউনশিপ দখল করে নিয়েছে বলে অসমর্থিত তথ্য এসেছে। দেশটির সরকারি সংস্থা বিজিপি সদস্যদের কেউ কেউ বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে।
চলতি মে মাসে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বিজিপির ১২৮ সদস্য এপারে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। নিরস্ত্র করে সবাইকে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। এখন বিজিপির ১২৮ জনকে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।
এর আগে দুই দফায় পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৬১৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ জন বিজিপি সেনা ও ১৫ ফেব্রুয়ারি বিজিপি, সেনা ও কাস্টমসের ৩৩০ কর্মকর্তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।