শহীদ মিনারে ‘লাগাতার অবস্থানে’ এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:২৭ পিএম

শহীদ মিনারে ‘লাগাতার অবস্থানে’ এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

ছবি: সংগৃহীত

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।

আন্দোলনকারীদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে এদিন থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘লাগাতার কর্মবিরতি’ পালনের সিদ্ধান্ত হলেও কোথাও তা পালিত হচ্ছে, কোথাও হচ্ছে না৷

ঢাকার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালু থাকার খবর মিলছে। ঢাকার মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসাবো শাখার শিক্ষক মেজবাহুল ইসলাম বলেন, “আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলছে। এখানে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন না।”

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবার ক্লাস চলছে বলে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার টি আলী কলেজের প্রভাষক শান্ত আলী বলেন, “আমাদের কলেজে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ আছে। তবে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্লাস চালাচ্ছে।” খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। 

এদিকে চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা ডিগ্রী কলেজে কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক মো. মাসুম।

ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বাগুটিয়া গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক মো. ইমরান হোসেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বাঁশগাড়ী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নোমান বিন ইসহাক।

সোমবার সকালেও রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে শিক্ষক-কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করছেন।

জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী সকালে বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য এসেছে ৯০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মবিরতি পালন করছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান পালন করছে না। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে।”

শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে তিনি।

এর আগে রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

দুপুর দেড়টায় তারা পুলিশের অনুরোধে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেস ক্লাবের সামনেই অবস্থান ধরে রাখেন।

এদিন দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলে যেতে বলে। কিন্তু শিক্ষকদের একটা অংশ তা মানতে রাজি হয়নি। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ভুয়া ভুয়া বলতে থাকে। এক পর্যায় পুলিশ পর পর বেশ কিছু সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে ও লাঠিপেটা করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেয়। প্রেস ক্লাবের সামনে জলকামানও আনা হয়।

শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।

এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।

Link copied!