তেজগাঁওয়ে গুলিবিদ্ধ সেই ভুবনের জ্ঞান ফেরেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩, ০৬:৪৪ এএম

তেজগাঁওয়ে গুলিবিদ্ধ সেই ভুবনের জ্ঞান ফেরেনি

গুলিবিদ্ধ ভুবন চন্দ্র শীল। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের বিজি প্রেস এলাকায় প্রাইভেট কার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিতে মারাত্মক আহত ভুবন চন্দ্র শীলের জ্ঞান ফেরেনি এখনও। চিকিৎসকেরা বলছেন, লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। ভুবনের জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত অস্ত্রোপচারও সম্ভব নয়। এমন অনিশ্চয়তা নিয়েই দিন কাটাচ্ছে ভুবন চন্দ্র শীলের পরিবার।

আজকের পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছে, গুলি মাথা ভেদ করে বের হয়ে গেলেও কিছু স্প্লিন্টার ভেতরে রয়ে গেছে। তাঁর দ্রুত অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা অস্ত্রপচারের উপযোগী নেই।

বুধবার রাত ৮টায় রত্না রানীর ভাই তাপস মজুমদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘লাইফ সাপোর্টে রাখতে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। ভুবনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। প্যারালাইজ হয়ে পড়েছে ভুবন। তাঁর মাথার ভেতর থাকা স্প্লিন্টার অপসারণে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এ জন্য ভুবনের মস্তিষ্কের রেসপন্স লাগবে ১০। কিন্তু বর্তমানে আছে ৭। এ অবস্থায় অস্ত্রোপচার সম্ভব না বলে জানিয়েছে চিকিৎসকেরা।’

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে প্রাইভেট কার আরোহী এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। সেই গুলি লেগেছিল মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে ওই রাতেই তাঁকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ভুবন চন্দ্র শীল গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। গুলশানে তাঁর কার্যালয়। রাতে কাজ শেষে সেখান থেকে মতিঝিলের আরামবাগের বাসায় ফেরার পথে তিনি গুলিবদ্ধ হন। আরামবাগের বাসায় তিনি একাই থাকতেন। তাঁর স্ত্রী রত্না রানী শীল একমাত্র সন্তানকে নিয়ে থাকেন নোয়াখালীর মাইজদীতে। রত্না মাইজদীর একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা গেছে, রত্নার ভাই তাপস মজুমদার ভগ্নিপতির চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, আশ্বস্ত হওয়ার মতো কোনো কথা চিকিৎসকেরা বলতে পারেননি। ওনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে সাত-আটজন সন্ত্রাসী চারটি মোটরসাইকেলে এসে তেজগাঁও শিল্প এলাকার সিটি পেট্রলপাম্প ও বিজি প্রেসের মাঝামাঝি রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তাৎক্ষণিক প্রাইভেট কার থেকে মামুন ও তাঁর দুই সহযোগী মিঠু ও খোকন নেমে পড়েন। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের পিঠ ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। সন্ত্রাসীদের করা গুলি গিয়ে লাগে ভু্বন চন্দ্র শীলের মাথায়।

শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন এখন শুক্রাবাদের একটি বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া এবং কুপিয়ে আহত করা হলেও তিনি মামলা করেননি। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করেছেন ভুবন চন্দ্র শীলের স্ত্রী রত্না রানী শীল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের শিল্পাঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) আরিফ রাইয়ান বলেন, যেহেতু ভুক্তভোগী ভুবনের অবস্থা বেশি গুরুতর, এ কারণে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলাটি যেন শক্ত হয়, সে জন্যই ভুবনের স্ত্রীকে মামলার বাদী করা হয়েছে। তবে পুরো ঘটনার বর্ণনা এজাহারে রয়েছে।

Link copied!