সিঙ্গাপুরে এখন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৬, ২০২৩, ০৭:৪৩ পিএম

সিঙ্গাপুরে এখন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা

ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ গরম। সরকার পতনের এক দাবিতে চলমান যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর মধ্যেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের অন্তত পাঁচ জন সিনিয়র নেতা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই সময়ে সিঙ্গাপুরে আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মির্জা আব্বাস। অন্যদিকে চিকিৎসাজনিত কারণে থাইল্যান্ডে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। প্রতিবেশি দেশ ভারতের দিল্লিতে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ।

শনিবার (২৬ আগস্ট) চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়েন মির্জা আব্বাস। সাথে ছিলেন তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ও দুই ছেলে। সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তিনি। এর আগে গত মে মাসে পাকস্থলীর সমস্যার কারণে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে চিকিৎসার ফলোআপের জন্য গত ২৪ আগস্ট সিঙ্গাপুর গেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সাথে রয়েছেন স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও মেয়ে মির্জা সাফারুহ। ঘাড়ের স্নায়ুতে ব্লকসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন মির্জা ফখরুল।

এদিকে প্রায় দুই মাস ধরে সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গত ২৭ জুন থেকে সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

একই সময়ে দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সিঙ্গাপুরে অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে এখন রাজনীতির ময়দানে চলছে জোর আলোচনা। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই দেশের বাইরে নেতারা। সামনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কর্মসূচিকেন্দ্রিক ব্যস্ততা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় আগেই শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিচ্ছেন নেতারা।

বিএনপির ১৪ সদস্যের স্থায়ী কমিটির ৬ জনই এখন দেশের বাইরে। অন্যদিকে শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। অসুস্থতাজনিত কারণে ও স্ত্রী বিয়োগের পর ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনিয়মিত। অন্যদিকে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শয্যাশায়ী। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে বর্তমানে সক্রিয়ভাবে দলীয় কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখছেন- গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান।

তবে শীর্ষ এই নেতাকর্মীদের একইসাথে বিদেশে অবস্থানের প্রভাব যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচিতে পড়বে না বলে মনে করছেন দলটির সিনিয়র নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, আন্দোলন চলবে নিজস্ব গতিতে। সাংগঠনিক নেতৃত্ব কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর দল থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। একে একে হরতাল, অবরোধ ও ঘেরাও কর্মসূচিও আসবে।

নিম্ন আদালতের সামনে অবস্থান, উচ্চ আদালতের সামনে অবস্থানসহ এ ধরনের কর্মসূচি থাকতে পারে বলে জানান বিএনপির নীতিনির্ধারণী ও যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা।

দেশের ভেতরে একসাথে আলোচনায় বসার সুযোগ না থাকায় কি দলটির শীর্ষ নেতাদের সিঙ্গাপুরে একই সময়ে একসাথে অবস্থান? এই বিদেশ সফর দলটির আন্দোলনের পরিকল্পনার অংশ কি না? না কি অসুস্থতাজনিত অবস্থানই আসল কারণ? রাজনৈতিক মাঠে বর্তমানে যে প্রশ্নগুলো আসছে সেসবের উত্তর সেটা দলটির পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলোই জানান দিবে।

Link copied!