ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার পৌঁছেছেন। তার সঙ্গে বিমানের একই ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও।
শুক্রবার, ১৪ মার্চ দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে তাদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বিমানবন্দরে তাদেরকে স্বাগত জানান।
দুপুর ২টায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিভাগ থেকে জানান হয়, জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে বেশ কিছু অনুষ্ঠানিকতা সেরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থি শিবিরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে রোাহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেন মহাসচিব।
জাতিসংঘ মহাসচিবের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন।
অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরে মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।
বাসস জানায়, পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসাথে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। পরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার রওনা দেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করছে এবং সফরকে ঘিরে বহু স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
“সফরকালীন ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেনাবাহিনী তদারকি করছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে শরণার্থী শিবির পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।”
এর আগে বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরসূচি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানের মধ্যে গুতেরেসের সফরের প্রধান কর্মসূচি শুক্র ও শনিবার।
আজাদ বলেন, কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টার আলাদা কিছু কর্মসূচি আছে। তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং একটি জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি একটি মডেল মসজিদেরও উদ্বোধন করবেন।
“জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজারে নেমে সরাসরি চলে যাবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। যেখানে তিনি একটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে একটি ক্যাম্পেইন এবং রোহিঙ্গাদের পুষ্টি ও সহায়তার বিষয় নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন শুনবেন। এরপর রোহিঙ্গা কালচারাল সেন্টারে গিয়ে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখবেন। এছাড়া তিনি কক্সবাজারের একটি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করবেন।”
এসব অনুষ্ঠান শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন, যেখানে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিত থাকার সূচি তুলে ধরে উপপ্রেস সচিব বলেন, “আমরা আশা করছি, এক লাখ রোহিঙ্গা এই ইফতারে অংশ নেবেন। দুজন শুক্রবারই কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফিরে আসবেন।”