লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) ৫ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর আসামি শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপর ১২ টার দিকে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরখাস্তকৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান সাজ্জাদ ওরফে শামস্। এদের মধ্যে মেজর জিয়া এবং আকরাম হোসেন শুরু থেকেই পলাতক। আর অপর চার আসামি কারাগারে আছেন।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। মামলার ছয় আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যের (এবিটি) মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে চাপাতির কোপে প্রাণ হারান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়। ওই সময় আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও। সেদিন রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের পরদিনই শাহবাগ থানায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।
১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) গ্রহণ করেন। ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। মামলায় ৩৪জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ২৮ জন সাক্ষ্য দেন।
এরমধ্যে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মারা গেছেন অভিজিতের শিক্ষাবিদ বাবা অধ্যাপক অজয় রায়। ছেলের হত্যার বিচার তিনি আর দেখে যেতে পারলেন না। এরমধ্যে মারা গেছেন অভিজিতের মা শেফালী রায়ও।