দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি আদায়ের দাবিতে হবিগঞ্জে আন্দোলনরত শ্রমিকরা অনড় রয়েছেন। কাজে যোগ না দিয়ে অষ্টম দিনেও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন তারা। এতে প্রতিটি বাগানেই নষ্ট হচ্ছে চা পাতা। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন বাগানগুলোর মালিকরা।
শনিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। সভায় হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন চা বাগানের পঞ্চায়েত প্রধান ও শ্রমিক নেতারা অংশগ্রহণ করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার পূর্ণদিবস ধর্মঘটের অষ্টম দিনেও চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে ধর্মঘট পালন করছেন। এতে উত্তোলনকৃত চা পাতাগুলো ফ্যাক্টরিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। একই সঙ্গে গাছের চা পাতা বড় হওয়ায় সেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল গণমাধ্যমকে বলেন, “শ্রমিকরা এবার তাদের দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন। দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরবে।“
এদিকে, মালিকপক্ষ বলছে, গত ১০ বছরে চায়ের দাম না বাড়লেও শ্রমিক মজুরি বাড়ানো হয়েছে ৭৪ শতাংশ।
প্রসঙ্গত,দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি আদায়ে ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। গত ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের ১০ জন শ্রমিক নেতার সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে কর্মকর্তারা বৈঠকে বসলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলে ১৩ আগস্ট থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিকরা।
গত ১৬ আগস্ট শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালে চা শ্রমিক ইউনিয়ন তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে চা-বাগান মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর বৈঠকেও কোনো সমঝোতা হয়নি।
বৃগত হস্পতিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক নেতারা বৈঠক করে দাবি আদায়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
চা বাগান সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে ২৫টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে। এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৪১টি বাগানের প্রায় প্রতি হেক্টর জমিতে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়।