জুলাই ৬, ২০২১, ০৮:১৩ পিএম
পক্ষপাতিত্ব করে উপকারভোগী বাছাই, যথাযথ প্রশিক্ষণ না দেয়া, আয় বর্ধক কাজে নিয়োজিত না করার কারনে ১২ বছরেও সুফল দেখেনি ‘আমার বাড়ি আমার খামার‘ প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর ১০ টি বিশেষ উদ্যোগের শীর্ষে থাকা এই প্রকল্পটি যুগোপযোগী হলেও তা বাস্তবায়নে আরও জোর প্রদান করা প্রয়োজন বলে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
পক্ষপাতিত্ব করে উপকারভোগী বৃদ্ধি
প্রতিবেদন অনুসারে পুরুষ ১৭.৭ শতাংশ ও নারী ১৪ শতাংশ আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সদস্য হবার যোগ্য নয়। তারা স্বচ্ছল ও বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থেকেও প্রকল্পের আওতাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক, বাছাই কমিটির পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদির কারনে অনেকেই সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তার সমন্বয়ে বাছাই কমিটি করার কথা থাকলেও তা না মেনেই উপকারভোগী নির্ধারিত হয়েছে।
প্রকল্পের সম্ভাবনা অনুসারে সাফল্য পায়নি।
অধিকাংশ পায়নি প্রশিক্ষণ
আয়বর্ধক কর্মকান্ডে সফলতার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ জরুরী হলেও প্রকল্পের আওতায় তা মানা হয়নি। প্রতিবেদন অনুসারে পুরুষ উপকারভোগীদের মাত্র ১৮.৫ শতাংশ ও নারীদের ১২ শতাংশ প্রশিক্ষণ পেয়েছে। যার ফলে ঋণ নিয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ড থেকে প্রত্যাশা অনুসারে আয় করতে পারছে না। প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার ও ট্রেড ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর ব্যপারে দাবি করেন তারা। এছাড়া প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের মধ্যে অর্ধেক সদস্য এখনও কোন সুফল পায়নি। ৫৩.৩ শতাংশ সদস্য তাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান বাস্তবে আয়-বর্ধক কাজে ব্যবহার করেছে।
নানা ঝুঁকি রয়েছে প্রকল্পটিতে।
ধীরে হলেও বাস্তবায়ন হবে
আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের যুগ্ম সচিব ও উপ প্রকল্প পরিচালক নজির আহমেদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, বর্তমানে প্রায় ৯৭ লাখ সুবিধাভোগী সদস্য রয়েছে। এত বড় আকারের সদস্যদের একসাথে সুবিধা দেয়াটা সম্ভব নয়। যদিও এটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা তাই ইতোমধ্যে ১২ হাজারের মতে প্রশিক্ষণ পেয়েছে। এবং যারা পেয়েছে তারা দ্রুতই কর্মকান্ডে জড়িত হয়েছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারনে দেড় বছর উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় নি।
তবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে বাকিদের প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পল্লী সঞ্চয়ী ব্যাংকের মাধ্যমে এখন এই প্রকল্পের অর্থায়ন হবে। সেখান থেকেই প্রশিক্ষণের অর্থায়ন আসবে। এখানে বাড়তি আর খরচ নেই। বরং আমরা একটি প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে দিয়েছে যার ফলে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়।
চার দফা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ
দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীণ পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়। কিন্তু নানা জটিলতার অজুহাতে ৪ বার প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। যা ফলে প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ৮৮৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা হয়। আর মেয়াদ ধরা হয় ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলেও উপকারভোগী বাছাইয়ে জটিলতা রয়েছে।